ছিলে গো তুমি বিদ্রোহী তেজোদীপ্ত এতো
ছিলে বড় অসহায়, সয়ে গেলে দুঃখ শত।
অন্দরে ছিল বুলি ‘ভগবান আর জল’
বাইরে ‘আল্লাহ, পানি’ এমনি শব্দ ছল।


তবুও তো পেলে না ওদের প্রেম আদর
দেয় নি মান, করেনি গো মেধার কদর।
লিখতে তুমি শত শ্যামা সঙ্গীত কখনো
আবার ইসলামী গজলে মুখর যেন;


গরীব হয়ে জন্ম হলেও, ছিল বড় মন
সইতে কত নির্মম উপহাস, সর্বক্ষণ;
বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে হলে ঐ নজরুল
গেয়েছো সাম্য গীত খেয়ে কত কষ্ট দোল;


বলতেও তুমি ‘তোমরা চেন না ওদের,
রাঘবেরা খোঁজ রাখে না এই হৃদয়ের’।
এতো লেখালিখি, গড়লে সাহিত্য সমুদ্র
ঘুচেনি অভাব তবু, ভাগ্য তেমনি রুদ্র।


হিন্দু নারীর প্রণয়ে হলে আবদ্ধ যখন
সমাজ ফতোয়ায় হলে কাফের তখন;
সুর সাগরে ভেসে হতো তব প্রাণ সঞ্চার
হলে বাংলা সাহিত্যে অহংকার, অলঙ্কার।


ইতিহাস ধরে আছে ঐ দুখময় চিত্র
তুমি কেন বাধ্য হলে, হতে নির্বাক স্তব্ধ।
তাই তো তুমি লিখেছিলে, জানি না কি ভেবে
‘যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে
অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর পুছবে –
বুঝবে সেদিন বুঝবে।‘


    জ্যৈষ্ঠ ১১, ১৪২১। মে ২৫, ২০১৪