আমায় না বলে কিচ্ছু করা হয়ে উঠতোনা তোমার।
সকালে উঠেই শুভ সকাল দিয়ে দিন শুরু হতো
শেষ হতো চুমুতে। এত বাধ্যগত , শান্ত, সৌম্য ছিলে তুমি
যে খুব ভয় হত কেউ যদি ঠকিয়ে দেয় তোমায়।
অন্যদিকে,সাধারণ আমি, দুবেনী আর কপালে টিপ ছিলো সর্বোচ্চ সাজ। তাই মনে মনে ভাবতাম এত কি পুণ্য করেছি
যে তোমায় পেয়েছি ; সব কিছু হাল্কা করে নেয়াতে তোমার জুড়ি ছিলোনা
হঠাৎ পকেট ফাঁকা জেনেও রিক্সা ধরিয়ে বেড়াতে
যাওয়া থেকে শুরু করে আমার বাবার রক্ত রাঙ্গা চোখের সামনে পড়ে
কোন রকম না ঘাবড়িয়ে নোট দিতে আসার অভিনয় , আমাকে মোহ মুগ্ধ করত। মুগ্ধ হতাম তোমার কণ্ঠে , তোমার ঠোঁট টেপা হাসিতে
মিথ্যে লুকোনোর ব্যর্থ চেষ্টার পর নত চোরা চাহনীতে ,
এমনকি তোমার হাই দেয়াটা পর্যন্ত ছিলো আশ্চর্য সুন্দর।
আমার সব কিছুতেই ছিলো তোমার পূর্ণ মনোযোগ ।
সকালে কি খেলাম, রাতে ঘুম হয়েছিলো কিনা,
মুখের ব্রণ টা টাটায় কিনা আরো কত কি !
তুমি বলতে, আর বাড়ি এসে আমি ভাবতাম, কি পুণ্যে তোমায় পেলাম।
অথচ আজ কতটা দিন ,মাস, বছর পেরোলো আমায় খুঁজলেনা তুমি।
সেই তুমি, যে আমায় ছাড়া পুরো একটা সিঙ্গারা
খেতে চাইতে না । কখনো যদি কলেজে না আসা হতো
অস্থির হয়ে পায়চারী করতে বাড়ির সামনের রাস্তায়,
অপেক্ষা করতে কখন বারান্দায় এসে দাঁড়াই ।
সেই তুমি, যে আমার জ্বর হয়েছিলো বলে
সারাদিন না খেয়ে কাটিয়েছিলে,
আমি খারাপ রেজাল্ট করায় নিজের সার্টিফিকেট
ছিঁড়ে কুটিকুটি করেছিলে।
আজ সেই তুমি স্যূট টাই পরে নিপাট ভদ্রলোকের মতন নয়টা পাঁচটা অফিস করো। অবসর সময়ে গোলাপের মতন ফুটে থাকা বউ নিয়ে
সিনেমা দেখো বা শপিং করো। কোথাও হঠাত মুখোমুখি হলে
আমাকে চেনা আর হয়ে ওঠেনা তোমার।
আর আমি, অবাক বিস্ময়ে ভাবি হয়ত ও তুমি
নও, তোমার মতন আর কেউ, আর কোন পুরুষ।
কিংবা নিপুন সুতোয় প্রেম বুনে যাওয়া
আর কোন প্রেমের কারিগর।
সে কিছুতেই তুমি নও । তুমি নও ।