আগুন (23-06-2018)
রণজিৎ মাইতি
--------------------
আগুন দেখলেই ভেতরের আনন্দটা কাউকে বোঝাতে পারিনা;
কুলকুল শব্দে বয়ে যায় ফল্গু স্রোত।
শৈশবে রান্নাঘরে ধোঁয়ার হদিস পেলেই মায়ের পেছনে ঘুরঘুর করতাম,
জানি দুধের সর আমার জন্যে অপেক্ষা করছে।
সেই বয়সেই মন থেকে চাইতাম,---
আমার আশৈশব খেলার সাথী রতনের বাড়িতেও একটু আগুন জ্বলুক;
ওর ডিগডিগে চেহারার বুঝে যেতাম কতদিন ওদের বাড়িতে উনুন জ্বলেনি।


মা ঘুঁটের উপর ছাই দিয়ে---
একটু কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিতেন উনুনে;
আনন্দে ভেসে যেতাম,সুকসুক করতো নোলা।
দেখতাম টগবগ করে ফুটছে ভাতের হাঁড়ি,চারপাশে ছিটকে ছিটকে পড়েছে দুধসাদা জুঁই।
সারা বাড়ি মিষ্টি গন্ধে মো মো করতো,
আর ভেতরে ভেতরে শুরু হয়ে যেতো তোলপাড়।
কল্পনায় দেখতে পেতাম---
মা ভাতের থালার সামনে বসে মাখিয়ে খাইয়ে দিচ্ছেন।
তখন বাড়ির মো মো গন্ধটাই মা মা গন্ধ মনে হতো।


আজও আগুন দেখলে আনন্দ হয়,
তবে ভাবনার আঙ্গিকে অনেক বদল হয়েছে।
যেমন আমি এখনও সর্বভূক,তেমনি আগুনেরও আছে সর্বগ্রাসী ক্ষুধা;
পুড়িয়ে ছাই করে দেয় সমস্ত অচলায়তন চোখের নিমেষে।


তাই বারবার বলি,---
হে আগুন আমাকে পোড়াও,
ছাই করে দাও আমার সমস্ত কলুষ।
পোড়াও দাউ দাউ করে,আমিও যে হতে চাই তপ্তকাঞ্চন।