চোখ বন্ধ করলেই কল্পনায় ভাসে একটা বন
বনের গহীনে ঘুরে বেড়ায় এক বনকুমারী।
বনকুমারী আনমনে হেঁটে বেড়ায়
আনমনে গান গায়
কাছে গেলেই দৌড়ে পালায়।
যেন লুকোচুরি খেলা
সারাবেলা।


ক্লান্ত হলে পাটি পেতে
বৃক্ষতলে
সে বসে থাকে।
একমনে নির্জনে
সারাক্ষণ নকশী বোনে।


আর আমি
দুরে বসে
বুনি কল্পনার জাল।
তার গলায় পড়াই বেলি ফুলের মালা
কানে দূর্বার দুল
চোখে লাগাই কাজলের কালি।
মুখ ধুয়ে দেই শিশিরের জলে
কপালে পড়াই নীল পদ্মের টিপ
দু’হাতে অনেক কাঁচের চুড়ি।
চুড়িতে চুড়িতে
ঝুনঝুন শব্দ হয়;
নিরব নিথর বন
সে শব্দে প্রাণ পায়।
বনকুমারী আমাকে গল্প শোনায়
কল্পনায়;
ঢাল-তলোয়ারহীন এক
রূপকথার রাজকুমারের গল্প।
গল্পে গল্পে সকাল কাটে
দুপুর-বিকেল-সন্ধা কাটে
গল্পের প্রতিটা শব্দ  
হৃদয়ের জমিনে হাঁটে।


আমার তখন
ঘোড়সওয়ার হওয়ার ইচ্ছা করে
সাত-সমূদ্র পাড়ি দেওয়ার ইচ্ছা করে
রাজকুমার হওয়ার ইচ্ছা করে
বনে যাওয়ার ইচ্ছা করে
বনকুমারীর হাতটা ধরে স্বপ্ন দেখার ইচ্ছা করে।


কিন্তু হঠাৎ
ভোর হয়
বনকুমারী পালিয়ে যায়;
আমার ইচ্ছার বনে আধাঁর নামে
কে যেন বিষাদ নামায়।
কল্পনারা সব গুমড়ে কাঁদে;
যেন উড়তে গিয়েই ডানা হারায়।