একটা এসএমএস দিয়েছিলে
পিকনিক থেকে ফেরার পরদিন
লেখা ছিল
‘’ভালবাসি, ভালবাসি’’


ভালবাসায় অদ্ভুত এক দ্যোতনা আছে
রঙ্গিন রঙ্গিন স্বপ্ন আছে
আমার স্বপ্নও বর্ণ পেল
ভালবাসায় রঙ্গিন হলো।
সেই রোমান্টিক এসএমএস এর জন্য তোমাকে ধন্যবাদ।


বৈশাখ মাসে
দেখা হলো
এনবিআরের সামনে
ফুচকার দোকানে
তুমি ফুচকা খাওয়ালে
বিশ্বাস কর- সেটাই ছিল
আমার জীবনে প্রথম ফুচকা খাওয়া
সেদিনের সেই সুস্বাদু ফুচকার জন্য
তোমাকে ধন্যবাদ।


একদিন ভুল বুঝেছিলাম
তুমি ভুল ভাঙ্গাতে আমার অফিসে এলে
অফিসের রাস্তায় কথা হলো
হঠাৎ করেই তোমার দু’চোখ ভরে জল এলো
তুমি কাঁদলে
আমার জন্য কাঁদলে।


আমিতো এক ধুলিকনা
চটির তলায় ধাক্কা খেয়ে উড়ে বেড়াই
আমার জন্য কেউ কখনও কাঁদতে পারে
সেই প্রথম বিশ্বাস হলো।
আমার জন্য চোখের জল ফেলবার জন্য
তোমাকে ধন্যবাদ।


একদিন রিকসায় উঠেছিলে
আমি উঠতে গিয়ে পড়ে গেলাম
রাস্তার মানুষ হাসল
তুমিও হাসলে
সবার হাসিতে ব্যাঙ্গ ছিল
কিন্তু তোমার হাসিতে ছিল মমতা আর মায়ার বন্ধন
মনকাড়া সেই অনাবিল হাসির জন্য
তোমাকে ধন্যবাদ।


আমার অনেক কিছু ছিলনা
তুমি বললে-
সুখি হতে অনেককিছু লাগেনা
লাগে শুধু দু’পেয়ালা চা
একটা ছোট বারান্দা, আর একটা পড়ন্ত বিকেল।



আমি দুটো কাপ কিনেছি
ছোট একটা বারান্দায় লাগিয়েছি বকুলের চারা
এরপর অপেক্ষা  
সেই পড়ন্ত বিকেলের অপেক্ষা
আমাকে অপেক্ষায় রাখবার জন্য
তোমাকে ধন্যবাদ।


চারটা বছর পেরিয়ে গেল
এতগুলো দিন
হারিয়ে গেল?
দিনের হিসেব রাখেনা কেউ
হিসেব রাখে মুদ্রাস্ফিতির
মূল্যবাড়া গয়না-পাতির।


সেদিন দেখলাম
চলে যাচ্ছ
শেওড়াপাড়ার সেই ব্যস্ত সড়কে পিছু নিলাম
তুমি লাফিয়ে গাড়িতে উঠলে
গাড়িটা চলে গেল।
তুমি কি ফিরে তাকিয়ে ছিলে?
আমি কিন্তু দাড়িয়ে ছিলাম
তুমিতো চলে গেলে
আমিই শুধু গতির কাছে হেরে গেলাম।
আমাকে এভাবে হারিয়ে দেবার জন্যও তোমাকে ধন্যবাদ।


আজ সারাটাদিন
আমি সেই বকুলচারার বারান্দাতেই বসে আছি।
তোমার এসএমএস এল;
লিখেছ-
“চায়ের কাপে আর সুখ আসেনা
এখন বাড়ি লাগে, গাড়ি লাগে”।


তোমার কথায় যুক্তি আছে
বাকিটা আর পড়া হলোনা
চোখভরে জল এল।
জল কি আর যুক্তি বোঝে?


দেখলাম-
আমার বুকুল চারাটা কেটে দিচ্ছে হাজার লাল পিঁপড়া
চায়ের উষ্ণতা মিশে যাচ্ছে শীতল হাওয়ায়
পরন্ত বিকেল বিদায়ের আগে ছড়াচ্ছে রক্তিম আভা
আঁধার নামবে একটু পর
আমি আঁধার নামার অপেক্ষায় আছি।
বারান্দায় আমার আঁধার নামানোর জন্যও তোমাকে
আবারো ধন্যবাদ।