দিশা
রেদুয়ান রায়হান
দ্বীপজ্বালা জোনাকি মুখ ঢাকো লজ্জায়
কেগো তুমি ডেকে যাও আধারের সজ্জায়?
তুমি কিগো প্রেমদ্বার, বিরহের সমাপন
শতরূপে সত্ত্বায় তোমারেই খুঁজে মন।
তুমি শিরি মমতাজ প্রেমিকের হৃদয়ে
আমি তার উচ্ছ্বাস নবপ্রেম উদয়ে।
দিবাকর দিবসের, নিশীথের চন্দ
ক্ষণে ক্ষণে ছুঁয়ে যাও হৃদয়ের রন্ধ্র।
সীতা তুমি নির্ভয়ে পাড়ি দাও হুতাশন
আমি রাম, বলি কেন বৃথা এই প্রহসন!
কৃষ্ণের রাধা তুমি বিলায়েছ দেহমন
মধুবীন ঝংকারে দোলায়িত অণুক্ষণ।
ঘুমভোলা শিশু তুমি জননীর কোলেতে
মধুকর খুঁজি মধু বিকশিত ফুলেতে।
কিশোরীর হাসি তুমি খুলে দিয়ে এলোকেশ
বাসরের সজ্জাতে তরুণীর বধুবেশ।
তুমি নাকি মহাচীন প্রাচীরের বাধাতে
আমি তারে ভেঙে ফেলি দুর্বার আঘাতে।
তুমি যাও ছাপিয়ে বিস্তৃত মহাকাশ ছুঁয়ে দেব তোমাকেই মনে সেই অভিলাষ।
ঘাতকের মিছিলেতে তুমি এক দস্যি
অবহেলে ধরণীরে করিয়াছ নস্যি।
তব ত্রাসে কাপে যেন গোটা মহাবিশ্ব
আমি এসে মুছে দেই এই পটদৃশ্য।
তুমি ফুল অর্ঘ্য, শহীদের বেদীতে আমি হেথা যাই ছুটে মৃদুস্বরে কাঁদিতে।
পুষ্পের অঞ্জলি খুলে যেই নবলোক।
কান্নার নোনাজলে দুলে সেথা মহাশোক।
মরুতৃষা বুকে তুমি আরবের বেদুইন
যাযাবর পথিকের পিপাসিত সারাদিন।
আলেয়ার পিছে তার ছুটে যাওয়া অনি:শেষ।
শান্তির সারথি আমি তার অবশেষ।
তুমি থাক কিশোরের এলোমেলো স্বপনে
মানবীর মাঝে তার হৃদয়ের কাঁপনে।
হাটো তুমি মেঠোপথে জ্বালাময় দুপুরে
আনমনা আমি তব চরণের নুপুরে।
ধরণীর বুকে তুমি ফসলের সমাহার
কৃষকের চোখে তুমি প্রতিদান মমতার।
কৃষাণীর সরলতা ঘোমটার আড়ালে
হেসে উঠ নীরবে আমি এসে দাঁড়ালে।
তুমি যেন মতিউর করাচীর মাটিতে
অগোচরে হানা দাও ঘাতকের ঘাটিতে।
আসাদের প্রতিবাদ, দ্বিধাহীন চিত্তে
আমি তার ফুলকি চেতনার বৃত্তে।
বিধবার ব্যথা তুমি সুখস্মৃতি স্মরণে
হাহাকার ক্রন্দন শ্বেতবাস বরণে, অপঘাত তুমি তার মিলনের রাখিতে
অশ্রু যে আমি তার সকরুণ আখিতে।
আছো তুমি জড়িয়ে বেদনার তত্ত্বে জড়িয়ে আছো তুমি ভ্রান্তি ও সত্যে,
স্বপ্নের দিশা তুমি, দিশা তুমি জীবনে
তোমাকেই খুঁজে ফিরি কবিতার ভুবনে।