এন্না ঠাবাম্ সাইঢানাই, য়াশোডা


হা হা কিছুই বুঝলি নাতো যশোদা? হা হা বুঝে শুনেই কি দুনিয়া সব কিছু হয়? এই যে গোকুলের মেয়ে যশোদা,বুঝে শুনেই কী অপরাধ করেছিলে পূর্ব জনমে,, যে এক মানব শিশু বড় করবে আপন পুত্র স্নেহে,,অপরাধে? অপরাধ যদি নাইবা করবি,,তাহলে জল ঢেলে ঢেলে গাছের ডালে ডালে যে ফুল ফুটালে সেই ফুল কোথায়?রান্না করে খাবারের যে ঘ্রাণ ছড়ালে সে ঘ্রাণ কোথায়?
আদর স্নেহ মমতায় যে পাখির শাবক করলে বড় সে পাখিটি কোথায় অভাগিনী?কোকিলের ডিম কাকের মাতৃত্বও মনে রাখে নারে যশোদা,,মনে রাখে না,,,!
এই তো তুই দধি দুগ্ধ নিয়ে বসে থাকিস ঘরে,দরজা জানালা সব উন্মুক্ত করে , কই একটা বিড়ালও তো আসে না,, মা,মা স্বরে না হোক অন্তত মিউ মিউ সুরে !,সময় ফুরিয়ে গেলে এই দুনিয়ায় সবাই ভুলে যাওয়ার দলে,সবাই আতসর শেষে তার ছেড়া একতারার দলে।সবার কন্ঠেই সুর যায় বদলে!!


বদলিস না শুধু তোরা, মা হতে হতে দেবী হওয়া তোরা!তুই হয়ত খেতে বসলেই কোন এক বেদনায় সব খাবার দিয়ে দিস আশে পাশের যে কোন পশু, যে কোন পাখিকে। তোর হাতে বানানো সুতার জামাটায় বার বার হয়ত একটি শিশুর আকার
আসে চলে।কিন্তু কেন যশোদা কেন,,,?
অন্যের পোশাক গায়ে পরলেই যে নিজের পোশাক হয়ে যায় নারে অভাগী।হয়ে যায় না!!


আয় আয় চাঁদ মামা টিপ দিয়ে যা,,
এই বলে বলে শিশুকে ঘুম পাড়ানোই কেবল যায়,,
জাগানো যায় না!! অন্তত এই বলে জাগানো যায় না,,,
শিশু ঘুমের ঘোরে হাসে,ঘুমের ঘোরেই কাঁদে,,
অথচ তোরা হাসিস জেগে জেগে,তোরা কাঁদিস বসে বসে,,,
আর এ জন্যেই এখনো তুই
কৃষ্ণ ছাড়া খেতে পারিস না,,,
তাহলে বিষ খা,,,বিষ খা,,পুত্র স্নেহের বিষ!!
কৃষ্ণ ছাড়া নিজের ঘরেও থাকতে পারিস না,,,
তাহলে এবার বনবাসে যা পুড়াকপালী,,,
কৃষ্ণ ছাড়া হাতের কাজ হাতেই রয় পড়ে,,
দু চোখ বেয়ে পড়ে জল গড়িয়ে,,,
মনের ভেতর এক অসহ্য ঘুন পোকা খায়
তোরে ঘুন ঘুন করে,,
খেতে দে,,খেতে দে ওদের,,,
অন্তত এ নরক জীবন হতে বেঁচে যাবি,,,
আর কোন মানব শিশুর জন্যে তোকে মা হতে হবে না।
নিজের আঁচলের ছায়ায় রেখে বাঁচাতে হবে না
কোন শাবক,, বাজ, চিল,শকুনের চোখ হতে।


যে শাবক বড় হলেই চলে যাবে
তোর দুয়ারের সীমানা,,লাথি দিয়ে ভেঙ্গে,,,
চলে যাবে কোন এক অচিন দ্বারকায়,,
চলে যাবে রুক্ষিনী দের ঠিকানায়,,
সে অমৃত খাবে ননীর বদলে,,
তোর আঁচল ভুলে জগতের আঁচলে রবে শুয়ে,,
তোকে নি:স্ব করে দিয়ে
পরিপূর্ণ ভগবান হবে আপনার রাজত্বে।
এবারও কী তুই নিজের অপরাধটুকু
বুঝতে পারবি না আপন গুনে!
ওই দেখ গাছ কাটার কুড়ালের হাতলটাতেও
গাছেরই কাঠ লেগে আছে,গাছের কাঠই লেগে আছে!


দূর কোথায়ও হতে
শ্মশানের কীর্তন ভেসে আসছে কানে,,,
আবার ভাবিস না এ নামকীর্তন,,নাম যজ্ঞের নামে!!
তাহলে অপরাধ আবারও করবি
এ জীবনে।