ত্বং বৈষ্ণবী -শক্তিরনন্ত-বীর্য্যা
বিশ্বস্য বীজং পরমাসি মায়া ,
সন্মোহিতং দেবি সমস্তমেতৎ
ত্বং বৈ প্রসন্না ভুবি মুক্তিহেতুঃ ॥


শুধু কি তাই
তোতা পাখির মত নাওয়ায়ে খাওয়ায়ে শিখিয়েছিলে,
পাশে বসিয়ে শিখিয়েছিলে,,,
কোলে নিয়ে হেটে হেটে শিখিয়েছিলে,,,


সর্বমঙ্গল মঙ্গলে শিবে সর্বাতো সাধ্বীকে
স্মরণ্যে ত্র‍্যম্বকে গৌরী নারায়ণী নমোস্তুতে,,,,,


দেখো কত সুন্দর
সবকিছুই আমার মনে আছে মিষ্টি মাসি।
মনে আছে আমার সেই দিনগুলিতে
এই মন্ত্রগুলোর ধরার দেবীকে,,,,
কত কাছেই না ছিলাম আমি তার।
নিজ হাতে মুখে তোলে খাওয়াত দেবী আমারে,,,
নিজ আঁচলের ছায়ায় ছায়ায় রচে দিত আমার আকাশ।
আর সেই আকাশের নিচে মুক্ত এক ফড়িং হয়ে আমি জলের উপরো বসতে পারতাম ।
মাকড়সার পায়ে
দেয়াল বেয়ে সোজা উঠে যেতাম উপরে।
ঝুলে থাকতাম শুন্যের মাঝে।
কত ভাবেই না আমি ছিলাম
এক পাখাওয়ালা দূরন্ত বাছুর।
অথচ আজ এই মন্ত্রগুলোর মতই
নতুন কিছু মন্ত্র ভর করেছে আমাকে,,,
বশ করেছে এ বিশ্ব
প্যারিস,ওয়াশিংটন, লিসবন  মন্ত্রে,,,।
পাগলের মত ছুটছি দিক বিদিক,,,
মন্ত্র গুলো জপছি দিন-রাত।
কিন্তু খোঁজে  পাচ্ছি কি আমি আমার সেই দেবীকে?
মস্তিস্কের খাতায় লিখা মন্ত্র গুলি
ইচ্ছে করলেই পড়ে নিতে পারছি,
হ্যা হ্যা পড়ে নিতে পারছি বীরদর্পে।
তবে দেবী কোথায়?
কোথায় দেবী?
কোথায়?


আমি তো স্বর্গের দেবীকে মর্ত্যে বসে ডাকি না,
আমি তো মর্ত্যের দেবীকে স্বর্গের মত ডাকি।
কই কোন দেবীইতো আসে না মিষ্টি মাসি নামে।
কোন দেবীইতো সম্মুখে এসে বলে না,,,
ডাকছিস কেন?আমি ই যে তোর মিষ্টিমাসি।
আমি তোকে আবার কোলে তোলে নিব,,,
আমি তোকে নদীতে স্নান করাতে নিয়ে যাব
আমি তোর গায়ে সরিষার তেল মাখিয়ে দিব।
থালার ভাত গুলো  নাড়ু বানিয়ে
হাস,মুরগী,কবুতরের ডিম বলে খাওয়াব।
আমি তোকে পাশে নিয়ে শুব,,,
যেভাবে বৃষ্টির মাঝে শুইয়ে রাখে পাখি তার শাবককে।
আমি তোকে আবার শিখাব স্বর হতে ব্যাঞ্জনবর্ণ
হাতে ধরে ধরে লিখাব দুনিয়ার পথ।
শিখবি তো এবার তুই আমা হতে?
শুনেছি তুই নাকি কবিতা লিখিস
ভাবের স্নেহে, ভালবাসার মোহে কলম ভিজিয়ে রাখিস,,,
কিছু লিখবিতো আমার তরে?
বিদেশের শহরের বড় বড় ট্রাম,মেট্রো বিমান
সবখানে চড়াও শিখেগেছিস!!
শিখেছিস কি পুত্র কাকে বলে?
মন্ত্রের এক শব্দ থেকে অন্য শব্দের যত দূরত্ব
ঠিক ততখানিও দূরত্ব নেই পুত্রের সাথে মাতার।
মন্ত্র টাই মুখস্ত করে রেখেছিস পাগল
বুঝিস নি সন্তানের সাথে মাতৃ জন্মের  পুনঃ পুনঃ আবদার!
আমারো তো ইচ্ছে করে
পুই শাকের সাথে ডাল রান্না করে খাওয়াতে তোকে,
আমার তো ইচ্ছে করে
বই খাতা কলম তোলে দিতে তোর হাতে।
আমার তো ইচ্ছে করে
যশোদার মত কৃষ্ণ শাসন করতে তোকে।
ইচ্ছে করে তোর অপেক্ষায় থাকতে,,,
কবে তুই স্কুল থেকে দৌড়ে এসেই
জরিয়ে ধরবি আমাকে!
কিন্তু সেই ইচ্ছে টা আর কী পুরন হবে?
মন্দিরের দেয়াল ভেঙ্গে পুত্র কোলে নিয়ে
হাটতে পারবো কী সারাটা বিশ্বে?
নাকি মন্ত্রের মধ্যেই আবদ্ধ করে রাখবি তুই,,,
আরতি করে করে আটকিয়ে রাখবি মন্দির জেলে?


ছূটে আয় বাবা ছূটে আয়
ফিরে আয় তুই এই যশোদা মায়ের কোলে।
তোর জন্যেই যে অপেক্ষায়  
গ্রামের প্রতিটা  কাঠাল গাছ,প্রতিটা পুকুর,প্রতিটা রাস্তা।
জমির ধান, উঠানের আল্পনা,সরিষা ফুল,
বীরেন দাদুর রসগোল্লা,শরীফ উল্লাহর আইসক্রীম,
চমচম আর হাওয়াই মিষ্টি।


নাকি এ সব কিছুই ভোলে গেছিস?
ভোলে গেছিস তোর দেশের সব আইফেল টাওয়ার গুলি।
কেবল মন্ত্রটা রেখেছিস ধরে পাখির মত,,,,


------------------------------------------
রুবেল চন্দ্র দাস
প্যারিস