বাড়িটি বেশ বড়,, সীমানা প্রাচীরটাও আরো বেশ,,
তার ভেতরেই হাস মোরগের জন্যে কিছু বরাদ্ধ জায়গা,
গরুটার জন্যে উঠান কোনে পাতাহীন শিরিষ গাছের তল,,
ছাগল টার জন্যে কাঠাল গাছের নিচ,,
আর আমার জন্যে,,স্বামীর সজ্জিত কক্ষ।
বেশ সুন্দর কক্ষ! দেয়ালে দেয়ালে নায়িকাদের
নানান ছবি,
সমুদ্র সৈকতে স্নান করার সাথে সাথে
ঢেউ ছোঁয়ার ছবি,,!!!


দেবদাসের জন্যে চন্দ্রমূখী যেভাবে দাঁড়িয়ে ছিল মদ হাতে,,,ঠিক তেমনি একটি ছবি,,
জানো ছবিটা না আমার দিকে তাকিয়ে তাকে,,,
আমিও তাকাই,,,তার কাজলের দিকে
তার শাড়ি পরার ধরনের দিকে ,,,
তাকাই তার হাতের মদের পেয়ালার দিকে,,,
আর যারা সে পিয়ালার দিকে বাঁকা চোখে
তাদের দিকেও না চোখ টা চলে যায় ভুল পথে,,,
কিন্তু  ভুল তো নারীর জন্য জায়েজ নয়,,,।
ছবি গুলি দেখারই যে অধিকার নেই,,
তার আবার ভুল করার অধিকার,,,!


কিন্তু কেন?  কেন আমার সম্মুখে এই ছবি গুলি?
আমি আবদ্ধ দেয়ালের ভেতর বাইজী হব নাকি?
আমি আবদ্ধ ঘরের ভেতর শুধু চন্দ্রাবতী হব নাকি?
জী হবার যোগ্যতা যার নাই তার আবার বাইজি
তার আবার চন্দ্রাবতী,,,,!!!


আমার কাজ ওই ঘটি থেকে জল ঢেলে,,
পেয়ালায় রাখা,,,
আবার পেয়ালা হতে ঠোটের চিহ্ন মুছে
টেবিলে সাজিয়ে রাখা,,,
এর চেয়ে বেশি,,, আমার জন্য অপরাধ,অশ্লীলতা, হারাম,,অবাধ্যততা,,,,
অবাধ্য হবার শাস্তি জানো,?,জানবে কি করে...
গরুর চোখের জলকে সবাই তো আর কান্না বলে না!
কান্না বলে নিজের মনের মত করে না পাওয়াকে,,
নিজের মত করে চালক না হতে পারাকে।


হা হা হা কিন্তু জানো
আমি ঘরের ভেতর আগুনও হতে পারি,
বসন্তের যন্ত্রনায় ইচ্ছেমত কোকিলাও হতে পারি
কিন্তু কেউ তা আমা হতে চাইলে কেবলি..
মনের মত করে যাচ্ছে তাই চাইলেই কেবলি
নয়তো আমি বরফ,,
আমি আধুনিক দেবদাসের ঘুমন্ত চন্দ্রাবতী,,,,
আমার নামে একশত আটটি ফুল থাকবে শুধুই বরাদ্ধ,,,
কিন্তু সে ফুল জানবে না আমাকে, চিনবে না আমাকে,
আমার নুপুরকে,আমার নৃত্য লয় ছন্দকে
এমনকি আমিও চিনব না তাকে,,,
আমি চিনব না দেবদাস কেমন সমুদ্র সৈকতে,,,?
কেমন পারু নিষিদ্ধ কোন রাতে,,,?
আর কেমনই বা দেয়ালের ছবি,,,এই সজ্জিত কক্ষে?
হা হা হা হা....
চিনবো কেমন করে?
আমিও যে কোন এক ছবি
শুধুই ছবি এই কক্ষে!
আমাতে শুধু দেখারই আছে কারো নেশা
কারো পেশা,কারো বা পাশা,,
আর আমি?
ছবির আর কিইবা থাকে!!!
################
রুবেল চন্দ্র দাস
প্যারিস
০৮/০২/১৮