১)


পূজা


যদি পুজোয় আমি কাউকে
নতুন পোশাক উপহার না দিতে পারলাম
তাহলে আমার কাছে পূজা কিসের?
যদি কোন গরীবের ঘরে অন্নজল না দিতে পারলাম
তাহলে আমার কাছে পূজা কিসের?
স্বর্গের বাসিন্দার লোভ জাগতে পারে
দুনিয়ার মানুষের ব্যঞ্জনের প্রতি!
কিন্তু যারা এই দুনিয়ায় ভিক মাগে দুয়ারে দুয়ারে,
যাদের গায়ে কোন বস্ত্র নেই,
যাদের মুখে কোন হাসি নেই
যাদের পায়ের তলে মাটি আর মাথার উপর আকাশ নেই
তাদের কাছে লোভ কী?
মন্দিরের  বাহারি প্রসাদ?
দেবীর অযুত হস্তের
কোটি মোহরের বাহারি মূর্তি?
নাকি নিজের উদর একটি ঘর আর গায়ের বস্ত্র?


তাদের হয়ত দশ কিবা শত কোন হাত নেই!!!
দরকারও নেই,,,!!
দুটি হাতেই রেঁধে দে না একটু খাবার।
বানিয়ে দে না একটা ঘর,কিবা একটা পোশাক।
বাজিয়ে দেনা স্বপ্ন ঢোল মনের কোনে,,,
তাহলে পূজা টা মন্দিরে নয়
করেই যাব এই বুকে।


নয়তো পূজা মানেই আমার চোখের জল, দেবীর পায়ে
পূজা মানেই ক্ষুধার্ত মানুষ গায়ে গায়ে,,
পূজা মানেই শ্রেণী  বৈষম্য,,,,
পূজা মানেই অপুর বাড়ির পাশে
বড় বাবুদের উঠানে আরো লাল নীল বাতি,,।
পূজা মানেই এক দুখিনী মায়ের কাছে  প্রবাসী  পুত্র খোঁজার আকুতি।
পূজা মানেই সফলতার ঘরে তেলের বাগান
পূজা মানেই দু:খের সম্মুখে সুখের নিষ্টুর নৃত্য পালা গান।
পূজা মানেই এক বিরহী কবির
এক বেদনাবোধের উত্থান।
আর,,
" আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে"
ঈশ্বরীপাটনীর এই আহবান।


২)
কবিতার জন্যে


কবিতারর জন্যে বুকের উপরে নিয়েছি হিমালয় তোলে
সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েটার চুমু গেছি ভুলে।
নিয়েছি আমি শ্মশান জীবন ভোলানাথ চিত্তে
করছি পান হাজার গরল নেচে কবিতার নৃত্তে।


আমি কবিতার জন্যে রাজ্য ছাড়ব
ছাড়ব ওই বেহেস্তের স্বাদ।
আমি কবিতার জন্যে দেবতার মুখে
তুলে দিব বিষাদ।
করবো আমি সাগর শোষণ
করব প্রেম ওই হিংস্র সিংহীর সাথে।
আমি কবিতার জন্যে শর শয্যায়
থাকবো মহা সুখে।
ভিখারীর মত তাড়িয়ে দেব
দুয়ারে আসলে ওই কানাই
কবিতার জন্যে মাতাল হব
যদি কিছু পাই বা না পাই।


কবিতার তরে দাড়াব আমি হিরোশিমার বুকে
সবুজ ঘাস জাগিয়ে দিব সব পারমাণবিকে।
লিখে দিব মধুর বার্তা সর্প দন্ত মাঝে
নরকের দুয়ারে লাথি মেরে খুন করব যমকে।
কবিতার জন্যে হাজার নোবেল ফেলে দেব যজ্ঞে
আমি কবিতার জন্যে মানুষ হব  দেবতার রাজ্যে।


৩)আধারে আলো


কেন  ডাকছ এমনি
দেখছ কি না, আজ শরতের আকাশে মেঘ নেই
ছুটিতে গেছে, দূরন্ত হাওয়া,,,
কোথাও কোন বিষন্নতা নেই,,
শুধু পুজার গন্ধ ছাড়া।


তবু কেন ডাকছ আমাকে?
আমি তো সেই,,যাকে দেখা যায় তারার মত
কেবল আধার রাতে।


৪)চল ফিরি


তাহলে চল না, নদীর ঘাটে,,
একটু কচুরিপানা ফুলের সাথে দোলে আসি
চল কোন ঝোপ- ঝঙ্গলে, লুকোচুরি খেলে আসি,,
চল চল আমার সাথে কোন মাঝ দুপুরে
উঠান মাঝে রোদের ছায়ায় দুজন মিলে কিছু খেলি।
ঘুমের ভানে মায়ের পাশে শুয়ে
বড় বাড়ির কিছু একটা চুরি করি।


চল চল তোমার পুতুলের সনে আমার পুতলার
বিয়ে টা সেরেই ফেলি,,
পা্শা পাশি থেকেও
চিৎকার  করে কথা বলি,,
কাগজের নাও বসে বসে
চল হাওড় জলে ভেসেই চলি।