বাইরে অঝরে বৃষ্টি,,,
আকাশের কোনে কোন বিজলী,,
মাঝে মাঝে বিকট শব্দের বজ্রপাত,,,
এর মাঝেই পাশের বাড়ির মেয়েটি
জানালা খোলে বলল,,,
ও চাচী দেখেছ কত সুন্দর বৃষ্টি,,আহা কি দারুন রসিকগো।
আচ্ছা চাচী কি গান বাজানো যায় বলত,,বৃষ্টির গান!
ওই রবীন্দ্র সঙ্গীত টঙ্গীত ছাড়া
নজরুল গীতি কি কিছু আছে চাচী,,বৃষ্টির গীতি,
আহা কি দারুন বৃষ্টি,,,।
চাচী দেখ দেখ কদম গাছে কত ফুল ফোটেছে ,,আহা কি অপরূপ দৃশ্য।মনে হয় আমিও কদম ডালে বসে বসে ফুলের সাথে ভিজে হই একাকার,,
তুমি কি কভু ভিজেছ চাচী ,এমনি দিনে এমনি ভাবে?


চাচী সুশান্তি বালা মেয়েটির কথা
কান ভরেই গেল শুনে,,উত্তর দেবারও যে সময় দরকার।
তবে ছাতা মাথায় সন্ধ্যার আহ্নিক নিয়ে
তুলসী তলায় দাঁড়িয়ে মনে মনে
প্রার্থনা করেই চোখ মেলল কদম গাছটির দিকে,,,,
ওমা একি সেথায় একটি বাসায়  দুটি পাখির ছানা ভিজে একেকার।
মা পাখিটি যে তাদের কোথায় কে জানে,,?
কোথায় অলক্ষ্মীর ঝি মা পাখিটি,,,কোথায় পাষাণী।
এতটুকু দুটি ছানা,,,ঠোটের লাল রঙ এখনো যাদের যায় নি মিলিয়ে
এখনো যাদের ডানায় গজায় নি পালক,অথচ তাদের উপর নিষ্ঠুর এত ঈশ্বর!
হায় ভগবান বৃষ্টি যদি দিতেই হয় তাহলে এই পাখিটির বাসায় কেন?
কেন বজ্রপাত এই শাবক দুটির মাথার উপরে?
কেন অসহায় প্রাণকে আরো করে দাও অসহায়।
কেন বাধ ভাঙ্গা নদীতে এনে দাও এত প্লাবণ,,,।


ঠিক এমন সময় গাছ থেকে একটি পাকা নাড়িকেল ধপাস করে পড়ল
তাও তারই পায়ের কাছে,,,,
নরম তুলতুলে মাটির উপর
কতগুলি সবুজ কচি ঘাসের উপর,,
যে ঘাস গুলি এখনো মেলতে পারে নি
তিনটি পাতা,,,
ত্রিশুলের মত শক্ত করতে পারেনি অগ্রভাগ
সেদিকে তাকিয়ে বলল এক জননী সুশান্তি
গান যদি শুনিতে হয় গো মা,,,
শুনো ওই শাবকের কাছ হতে
মাতৃহীন বর্ষা বাদল কতই পিরিতের
তাদের সাথে,,,
গান যদি শুনতে হয়,,শুন এই কচি ঘাসের বুকে
কতটা রসের নালায় সিক্ত তারা
এমনি দিনের সুখে,,,!