১)
আমার মাঝে মধ্যে শিশুর সাথে পাল্লা দিয়ে কাঁদতে ইচ্ছে করে,,
মনে হয় আমি শিশুটিকে কান্না শিখাই,,,
কিন্তু যেই কান্না শুরু করি,,
তখনি বার বার হেরে যাই
শিশুটির কাছে,,,
হায়রে কবেই ভুলে গেছি
কান্না কেমন করে করে?
সত্যিই ভুলে গেছি কান্না
কেমন করে করে,,,
হ্যা শিশু তুমি আমাকে একটু কান্না শেখাবে,,
শেখাবে একটু হাসি?


২)
আমার ঘরের দেয়ালে রাখা ঘড়িটা দেখছিলাম,,,
কিন্তু একি,, সেও যে আমাকে দেখছে?
আমি বিছানাটাকে দেখছিলাম,,
একি সেও যে আমাকেই দেখছে,,
আমি একে একে সবকিছুই দেখলাম,,,
সবকিছুই আমাকে দেখছে,,,
কেবল আমি ই আমাকে দেখি নি,,,
যা ওরা আমাকে দেখল,,,
দেখল,,,আমাতে।


৩)
কবে থেকে যেন মুক্তি পেতে চাই কিছু থেকে,,,
যেন আত্মচিৎকারে বলতে চাই,,
আমাকে মুক্ত করে দাও
মূক্ত করে দাও,,,আমাকে।
আমি বাঁচতে চাই,,বাঁচতে চাই
বাঁচতে চাই ভবে,,,
পাশ থেকে কেউ বলল,,,
তোকে তো বন্দি হতে কেউ বলেনি,,
তোকেতো মরে যেতে কেউ বলেনি,,,
তাহলে মুক্তির দাবী,,বাঁচার দাবী
করছিস কোথায়,,
কোথায় করছিস,,,
কার কাছে করছিস? হু,,?


৪)
সর্দার বাবু বললেন,,
দাদা কবিতায় সব ঠিক আছে তবে
কোথায় যেন ভাবে মিল পাচ্ছে না,,,
মাতব্বর মশাই কইলেন,,
দাদা ছন্দ লয় না থাকলে কবিতা কি আর হয়,,,
হয় না!
ভীষণ ভদ্র জানালেন,,না
এগুলি কবিতা বলা যায় না
এগুলি কিছু,,,না না কিছুই না।
জ্ঞান সাহেব মুখে কলম নিয়ে জানালেন,,,দাদা,,পড়েন পড়েন,
লেখার আগে আরো পড়েন,,
প্রকাশ বাবু  হাতে তেল লাগাতে লাগাতে
কাছে এসে বললেন,,
ওগুলি ছাপালে,, মুড়ির ভালো টোংগা হবে দাদা,,টাকা দেন ছাপিয়ে দিচ্ছি,,দেখবেন মুড়ির বাজারে আপনার দাম খুব বেশি,,,
খুব খুশি হয়ে কলমকে জিজ্ঞেস করলেম,,,
তুমি কি দূর্গা পূজার মন্ত্র পড়ছ কলম,,,নাকি মন্ডপের প্রতিমা?
তোমার কি সপ্তমি, দশমী আছে?
তোমারও কি এক পাশে লক্ষ্মী এক পাশে সরস্বতী?
আর মাথার উপরে মহাক্ষমতা ধর মহাদেব?
তাহলে বিসর্জনে যাও এক্ষুনি,,,
এক্ষুনি যাও বিসর্জনে,,,
হৃদয়ের রসে যদি না রাখ মুখ ডুবিয়ে,,,
তাহলে তোমার অপমৃত্যু হোক এক্ষুনে,,
তুমি যদি কাঁদতে না জানো
না জানো কাঁদাতে,,
তুমি যদি হাসাতে না জানো
না জানো হাসিতে,,
তাহলে অভিশাপ দিলাম তোমাকে,,
পরজন্মে পুরুষ্কার হয়ে জন্ম গ্রহণ করিও ভবে।


৫)
একটি বালক বসে বসে পূজো করছিল,,
দুর্গা পূজো,,!কোথায় জানো?
একটি পুকুর পাড়ে।
চারদিকে কলমের আবৃত্ত জঙ্গল,,,
কয়েকটি ফুল সেখানে ফোটে আছে হাসি মুখে।
ঠিক এখানে বসে একাকী নিরলে
মাটির কাদায় সে বানিয়েছে দুর্গা মূর্তি।
হাত দিয়েছে পাঁচটা,,বাকী পাঁচটা দিতে পারে নি।
তার বামপাশে সরস্বতী আছে কিন্তু ডানপাশে
লক্ষ্মী নেই,,,।
ছেলেটি অনেক কষ্ট করে কার্তিক বানিয়েছে
কিন্তু গণেশ বানাতে পারে নি,,।
আবার যদিও শিব বানিয়েছে,,
তবে তাঁর মাথায় গঙ্গার জল দিতে পারেনি।


পূজাটা কি ছেলেটির হবে?
কি জানি!!! ছেলেটি এত সব জানে না।
জানে শুধু একটি পূজা করতে হবে!!
কাকে? কাকে করবে পূজা?
ঈশ্বরকে,,,,।
কীভাবে? কীভাবে করবে এ পূজা
তোমার সামনেতো দশহস্তের দুর্গা নেই
তোমার সামনে ফুল নেই,ফল নেই,,নৈবদ্য নেই
কিচ্ছুইত নেই,,,এমনকি ব্রহ্মজ্ঞ ব্রাহ্মণও নেই,,।
তাহলে কীভাবে তুমি পূজা করবে,,,
হেসে উঠলো ছেলেটি হট্টহেস্যে,,
হাসতে হাসতে বলল,,,
ওরে এখানে আমার সামনে কিছুই নেই
নেই নেই কিছুই নেই,,,
আমিতো আছি কিছুর সম্মুখে,,,,
আমার পূজা এভাবেই হোক,,,
অন্তরে অন্তর দেখে।