১)
ভেবেছিলাম আজ কবিতা লিখব না,,,,
প্রবন্ধের বিষয় বস্তুগুলো নিয়েই হেটে যাব রোহিংগা থেকে  প্রতিরাজদরবার,,,
কিন্তু এমন সময়ই সবজিওয়ালীর চিৎকার  বাইরে,,,,
পত্রিকার ছেলেটির তাজাখবর তাজাখবর সুর
টিভির পর্দায় ট্রাম্প আর মোদির শিরোনাম,,,
অনলাইনে বাংলাদেশ আর শেখহাসিনার মানব প্রেম।
বুকটা কেপে উঠলো,,আগুনের শিখার মত জ্বলে উঠলো,,,
একটি বিশ্বে এত এত খবর যদি হতে পারে
এত এত সাহস আর মানবতা যদি জাগতে পারে
তাহলে আজ আমার চোখে জল কেন,,, লিসা?
তোমার দুয়ারে বার বার রোহিঙ্গা হবার ইচ্ছে টা ছিল না
তারপরতো হয়েছি,,,
অন্যায়ের সাথে ন্যায়ের পার্থক্য দেখানুর জন্যে
ট্রাম্প হয়ত হতে পারিনি,,
কালির সাথে অন্ধকারের দূরত্ব দেখানোর জন্যে
মোদিও হতে পারি নি,,,
তাই বলে কি আমি সেদিন এই আমি ছিলাম না?
কবিতা লেখার মত কোন তথ্যই ছিলাম না,,,
নাকি তুমি সেদিন নারী হয়েও ছিলে নর?
এক পুরুষের হৃদয় ভাঙ্গার পুরুষ কারিগর।


আমিতো বার বার বলেছিলাম
একটি পদ্ম দিচ্ছি,,একটু হাসি দাও
একটি খাম ভরা প্রাণ দিচ্ছি
একটু সকালের সূর্য দাও
একটু অপেক্ষার স্টেশন দিচ্ছি
তুমি শুধু একটা যাত্রী দাও।
একটা যাত্রী দাও,,,,
আমি চিৎকার করে অগ্নি দেবতার নামে বলেছি
আমি রোহিংগা হয়ে আছি,,,
আমাকে একটি শেখ হাসিনা দাও
বর্ডারটি খোলে দাও।


কিন্তু না,,,সেদিন তুমি সূচীর শান্তি হস্তে করেছিলে আমায় খুন
ধুর ধুর করে তাড়িয়ে দিয়েছিলে আমার পাঠানো ডাকবক্স,,,
সে বক্সে আজ আমি চিঠি দেই হাতে লিখে
রক্ত বিছিয়ে দেই বক্সের মুখে,,,
রাধা হতে পারিস নি,,,কালি হয়ে রক্ত খেয়ে যা পুড়ামুখি
আমি অসুর জীবন মেনেই নিয়েছি
শুধু তোকে ভালবেসে,,,
শুধু তোকেই ভালবেসে,,,


২)


প্রতি রাতে আমি স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোর কেলিনগ্রোভ পার্কে বসি
তখন পাখিরাও নীরবে,,,দেখে আমাকে?
কত নাগ নাগিনীকে মিলন শিখেয়েছি সেথায়,,,
গিবসন স্ট্রিটের একশত এগার নম্বর বাসাটায় দিনেও যাই
একটু স্কচের চামচে চুমু দিয়ে মধুচন্দ্র নেবার স্বাদ ভোলা যে দায়,,
বল কী করে কেন্ট রোডের পাগলা পাবটাকে ভুলি,,,
দুষ্টু পানি হয়ত পান করি নাই সেথায়
তবে দুষ্টমিত শিখিয়েছি,,,
আমি এখনো লিসবনের সমুদ্র পাড়ে ভোলানাথ হয়ে শুয়ে পড়ি
কত পার্বতীরা জলে নামল, সাঁতার কাটল তবু আমায় ডাকল না,,
তবু যাই তো সেখানে,,,।
ভেজা শহরের সেই হোটেলের আলোগুলো খুব বেসরম ছিল
কত বার মানা করেছি,তারপরেও জ্বলেছে,,
রাধা কৃষ্ণের মিলন দেখার সাধ পূর্ণ করেছে।


আমি তাবিরার বুফেতে বসে খাবার ভক্ষণ করে করে
যে নারীর রুমালে মুখ মুছেছিলাম,,তার কাছে অনেক দেনা আছে,,
তাই প্রতি রাতে চাঁদের সাথে কথা বলে নিই,তার ভাষায়,,
প্যারিসের সেই সহকর্মীটি আজো আসি বলে আসেনি
বলেছিল আইফেল টাওয়ার দেখবে,,,
আমি প্রতি রাতেই আইফেল টাওয়ার দেখি


কই সেত এখনো আসে নি,,,
আইফেল টাওয়ার থাকবে ত এমনি?


৩)
আস   আজ খুন করে যাও এই নগরী
যার প্রতি কোনে কোনে রেখেছি ইন্দ্রদেব,বরিতে তোমারে।
রেখেছি স্বয়ং ব্রহ্মা, যিনি ইচ্ছে মত সাজাবে তোমারে।
আমি এখানে তোমার জন্যে মন্দির রেখেছি খালি
কোন ফুলকে আজো দেই নি ফুটতে,,,
আমি কোন পাখিকে আজও দেই নি গাইতে
নদীর পানি চলেই যাচ্ছে তবু দেই নি কিছু বলতে,,,।


আমি এখানে তোমার জন্যে শুন্য উদ্যান রেখেছি
আর রেখেছি এক কুঞ্জবন,,
যেথায় তুমি তোমার মত করে মত্ত হবে সারাক্ষণ।
তবে কোন দাস- দাসী  রাখি নি হেথায়
এযে পুজার নগরী, তাই আমিই হব দাস শ্রদ্ধা আর ভালবাসায়,,।
খুন তুমি করতে চাইলে আস,,,,আস হে দেবী
এই নগীরটা খুন করে, খুন কর আমায়।


৪)
আমি বুক জলে দাঁড়িয়ে  সূর্যকে প্রণাম করছি
আর তুমি কেটলিতে পানি গরম করেই যাচ্ছ,,,,
আমি তুলসী তলায় এসে ভেজা চুলে মন্ত্র পড়ছি
আর তুমি বিছানাটাকে গরম করেই চলছ,,,
আমি নিরামিষাশী হয়ে প্রতি ক্ষণ বেলপাতা খাই
আর তুমি স্বপ্ন সুদূরে বসে কত হরিনী বিরিয়ানী,,, খেয়েই যাচ্ছ


আজ আমি কচি মুরগীর ভুনা করেছি এক্কেবারে সুস্বাদু  করে
নদীর ধারে,চৌপথের মুখে,, আজ তা বিলিয়েই দিব,,
দেখি তা খায় কিনা কোন কাক কিবা শিয়ালে?
থাক তো প্রবাসী শের,,,থাক তুমি তোমার জঙ্গলে,,
দেয়ালের চিত্রে এবার আমার ছবি বসাব,তোমারটা ছিড়ে।


৫)
সকাল সকাল রবি বাবুর গান শুনে,,, দিনটাকে মেঘলা করতে চাই না
এর চেয়ে ইট নিয়ে আস,আমি হাতুড়ি দিয়ে বাজনা বাজাব
রক্ত ধমনিতে নিয়ে আসব হাকার গান।
আমি চায়ের সাথে কিছু মরিচের গুড়ো দিব মিশিয়ে
দুধের মাঝে কিছু পিপড়ের মুখ,,,
সকাল সকাল উর্বসীর গান শুনে জাগাব চোখ
রাখব দেহ মাটি কাটার কোদালে,,,।
নমে যাব বিশ্ব রবির আলোয়
দেখিতে সকলে।
হেলিয়া দুলিয়া নহে,,হাটিব বাজির পায়েতে।


৬)
একটু টক ডাল হবে?  তেতুল ছাড়া,,,
ওই আমলকির সাথে আমড়া মিশিয়ে,,,
কত্ত দিন হল,বইচা মাছের সাতে আমড়া খাই না
কত্ত দিন হল কচি ডাটার সাথে টাকির পোনা খাই না,,,
কত্ত দিন হল গরম গরম ভাতে এত্তগুলি পুটি ভাজা খাই না
বিশ্বাস কর প্রতি রাতে
আমি বনকচুর সাথে ছোট মাছের ছড়ছড়ি খাই
পুই শাকের সাথে চিঙড়ি মাছ
কচুর লতির সাথে ছোট মাছের ভুনা,,,
টেংরা মাছগুলো কেমন আছে গো?
আমার হয়ে একটু খেয়ে দেখিও,অমৃত খাওয়া লাগবে না।
শিং মাছের শুকতো,,,চান্দা মাছের কুড়কুড়ে মজা
আহা,,,দাও দাও একটু টক ডালই দাও
বাকী সব রাতের দেশেই খেয়ে নিব
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে,,


ওমা এই কিগো এযে আমি স্বপ্ন দেখছি
সমু সেভ সালাদের পাশে, দেশান্তরী হয়ে!!!
হায়,,,,,অমৃত,হায় ঈশ্বর
তুমি কত্ত দূরে?


৭)
কিছু এপারে আসছে,কিছু এপার ছেড়ে যাচ্ছে সেপারে,,
কিছু আমার সাথে আসছে,কিছু আমাকে ছেড়ে যাচ্ছে কারো সাথে,,,
মাঝখানে রয়ে যাচ্ছে শুধু রক্ত আর কান্না,,,
তলোয়ার,পোঁড়া ঘর,ভয়ার্ত চোখ আর আহাজারি


যে শিশুর মুখ দেখে আমি কাদছি,
এমন অনেক শিশুর মুখ আমি বানিয়েছি
যে নারীর দুঃখে গগন ফাটাচ্ছি
এমন অনেক নারী আমি প্রতিদিন বানিয়েছি,,,
তাহলে আমি কে?


আমি মুসলিম দেশে মুসলিম
আমি বৌদ্ধের দেশে বৌদ্ধ্
আমি বরফের দেশে বরফ
আগুনের দেশে আগুন
আমি বালির দেশে বালি
পাহাড়ের দেশে পাহাড়
চাপাতির দেশে চাপাতি


আমাকে নিয়ে সত্যি আজ একটু কান্নার দরকার
আমার ভেতরে আমাকে চেনা দরকার।
আমার চেহারা দেখা দরকার
সকল ভয়ার্ত শিশুর চোখে,,
সকল ক্রন্দিত নারীর মুখে,,,


তাহলেই পাব অধিকার
কান্নার তরে।


৮)
# এটি একটি গান ( সুর করা আছে,তবে নিজের ইচ্ছে মত সুর দিতে পারেন)


আশা যদি থাকে ঘরে, ভালবাসা পাব কি ছুঁতে?
চলরে আশা, চল যাই যমুনাতে।


সেথায় যে আছেরে জল,করে কিলবিল করেরে ছল
চলরে আশা ডুইবা মরি তাতে
আশা যদি থাকে ঘরে, ভালবাসা পাব কি ছুঁতে,,,,?


গাছে গাছে লাগছে আগুন,লোকে বলে এ-নাকি ফাগুন!
চলরে আশা পুড়ে মরি তাতে,,,
আশা যদি থাকে ঘরে,ভালবাসা পাব কি ছুঁতে?


রুবেল বলে চলরে আশা,শ্মশানেতে বাধি বাসারে
মরে মরে বাঁচি দুনিয়াতে,,,
আশা যদি থাকে ঘরে, ভালবাসা পাব কি ছুঁতে?
*****************************************************
রুবেল চন্দ্র দাস
প্যারিস
১৬/০৯/১৭