আমার কয়েকটি কবিতা


১) চাইলেই এখানে যোগাযোগ করতে পারো,,,,
এখানে তোমার জন্যে আসন রাখা আছে যতনে,,
টেবিলের উপর আছে ফুলদানি,
আর একটি বর্ণহীন পত্রিকা।
তুমি চাইলেই সেথায় সংবাদ লিখতে পারো দিন রাত
চাইলেই তুমি এখানে এসে নিতে পারো সব বিজয় করে
দরজা জানালা বন্ধ করে স্পর্শে স্পর্শে
দৃষ্টি দিতে পারো অন্ধকারেরও চোখে,,,।
তুমি চাইলেই এখানে আসতে পারো যেকোন বার
যেকোন মাস,যেকোন বছরে।
এখানে তুমি বসন্ত বাতাসে বসন্ত দেবতা
প্রতি দমে দমে।


২) ঘুম থেকে উঠলাম,
এখনো ঠাকুরকে প্রণাম করি নি
বাজারের ফর্দ হাতে এসে হাজির গিন্নি।
জীবন কী এটাই?


মোবাইলের রিচার্জের মত কেবলি রিচার্জ?
পকেট পূর্ণ আর শুন্য করার খেলা।
নাকি জীবন গিন্নীর সুনয়ন
গিনীর বাকা হাসি
গায়ের ঘ্রাণ।
নাকি এসব ওই ফর্দ লেখার পাতা?


৩) ভালো থেকে,, আবার দেখা হবে,,
এইতো এখানেই,,,।
যেখানে তুমি প্রথম মন্ত্র উচ্চারণ করে বলেছিলে
প্রেমই হল দেবী,আর প্রেম ই হল পূজা।


সেখান থেকে আমিও শিখেছি
তোমার চোখ,মুখ,বুক,চুল রাশি
সবই যেন এক মায়া কিবা  যাদু।
যার নেশাতে রাতের ঘুম আমার পরদেশে
কল্পনার রাজ্যে আমি হেলেন।
উদার দৃষ্টিতে কে যেন হরণ করে নিচ্ছে
অহল্যা করে,,,।
আহা কী শান্তি!!!!
ইন্দ্র দেব আবার আসবে কবে?
আমি পাথর হতে রাজি
তবু আমি আসব আবার হেথায়
তোমার তরে।


৪) আমি কী ক্ষতি করেছি এই দুনিয়ার
যে দিঘীই হতে হবে তোমার কাছে?
আমার কাছে কী কোন কানন নেই
যেখানে বসে  কোকিলের মত ডেকে ডেকে
দু এক খান কবিতা লিখতে পারো
কারো তরে?
আমার কাছে কী কোন স্রোতস্বিনী নেই?
যার পাড়ে দাঁড়িয়ে আবৃত্তি করতে পারো
বনলতা সেন কিবা মানসী?


নাকি আমি এক শুষ্ক বালুচর?
যেখানে সবাই বেড়াতে আসে সময় করে,,,
বসতি করতে নয়
প্রাণের তরে!!


৫) দেখই না একবার চেয়ে,,,এদিকে
কত লজ্জাবতী পাতা লেগে আছে নজরে আমার,,,
কত শুণ্য উদ্যান ভেসে আছে বাসনায়,,,
কত তাজমহল শুয়ে আছে কামনায়।


দেখবে কি তোমার জাদুকরী মন্ত্রের নয়নে
লাগাবে কী আলো তোমার বদন হতে এ বদনে?
তাহলে আমি এক মহাভারত লিখব
সেখানে পাঞ্চালী হবে তুমি বারে বারে।
দুশাসন কে আরো একটু সাহসী করে দিব আমি
আরো করে দিব বদমাস।
আরো করে দিব চরিত্রহীন
তবু যদি একটু তাকাও আমার পানে।


৬) কী সুন্দর বলো তুমি?
আচ্ছা কোথা থেকে শিখেছ এ সব?
রাতে শুয়ে শুয়ে পাজি বালিশের কাছ থেকে বুঝি?
নাকি বিছানার নরম অভ্যাসটা থেকে?
কেমনে জানলে এই তরঙ্গ কথা?
বিদ্যুৎ খেয়েছিলে কি কোন মেঘলা দিনে?
নাকি স্বর্গ সভায় বাদ্যকর ছিলে কোন কালে?
তাই আমাকে নাচাচ্ছ তুমি তোমার
কথার বাদ্যে কিবা তরঙ্গে।


৭) পূজাতো হাসপাতালে হয়,,,নিত্য।
এই তো গতকাল একটি মেয়ে এসেছে হেথায়,,
হাত দুটি কাটা,,,শুনেছি স্বামী আর সংসার নিয়েছে নাকি কেটে,,,
আরেকটি মেয়ে এসেছে বুকের দুধ গুলোতে শিয়ালের
অজস্র কামড় নিয়ে,,,।
মাথায় তাজের বদলে রক্তের জমাট বাধা মুকুট।
মেয়েটির নাভি থেকে নিচ পর্যন্ত সুড়ঙ্গপথ করেছে হায়েনারা
কিছুদিন আগেই তৃতীয় বধু তোলে ঘরে
স্বামী আদরের বদলে।দিয়েছিল এসিড তোলে মুখে।
নালান্দা লাইব্রেরীরর মত লুট করেছিল বর্বর বখতিয়াররা
তার স্বামীর সম্মতিতে।
অথচ কথা ছিলো,,, লাত্থি মারলে মূর্তির মুখে
জান্নাতে নিয়ে যাবে বখতিয়ার,,,,স্বামীর সোহাগে।


কিন্তু এখন সে কবরের পথে
গায়ে অজস্র শকুনের চিহ্ন,,,
হাতে কোন অস্ত্র নেই দুর্গার মত।
আরেকটি মেয়ে এসেছে গায়ে অজস্র
আদর সোহাগের পাঠশালার বর্ণনা নিয়ে।
আট বছরের দেহে কাজের মেয়ে নাম লিখে দিয়েছে
হিজাব পরিহিতা আরব মনস্কা গৃহিনী।
আমি হাসপাতালে বসে বসে তাদের পূজাই করেছি
যতটা তুমি করেছে মন্দিরে।


আজ তাদের বিজয়া দশমী
কেউ যাচ্ছে কবরে।
আর কেউ ফিরছে ঘরে।
আমি হয়ত হাসছি,,হয়ত কাঁদছি
কিন্তু নিত্য পূজা করেই যাচ্ছি।


##############
রুবেল চন্দ্র দাস
প্যারিস
০৪/১০/১৭
unedited