খবরটা যখন জানা গেল,,
তখন পাশের বাড়ির মতিন চাচার কবর খুঁড়ার
শব্দে অগ্নিদগ্ধ হচ্ছিলো এ গ্রামেরই লোক।
বাইরে বৃষ্টি তেমন নেই তবে বজ্রপাতের গর্জন
গীর্জার ঘন্টার সাথে সমান তালে বাজছে।
পাশের গৃহে কোন কুলবধু উলুধ্বনি দিচ্ছিলো
শাখ ঘন্টি বাজাচ্ছিলো,,
তবুও কেউ জানি খবরটার খবর হারাতে পারল না,।
চোখ দিয়ে জল বের হয়েই
কি এক অদ্ভুত সুরে মনটাকে বলল,,
আমার সাথে যাবি? যাবি আমার সাথে?
তাহলে চল,,।
তোকে আমি সর্বোচ্চ নীল পাহাড় দেখাব,,
তোকে আমি সর্ববৃহৎ পঙ্কিল সাগর দেখাব,
সবচেয়ে লম্বা সাপের মুখে গুজে দিব প্রতিক্ষণ।
সবচেয়ে বদমেজাজি ইন্দ্রের ঘরে বন্দি করে দেব
প্রতি নোংরামির রাতে।
কিন্তু আমি বললাম, অশ্রুজল
কেমন করে আমি যাবরে তোর সাথে?
চোখ দিয়ে তুই না হয় টপ করে বের হয়ে যাস
কিন্তু আমি? আমি যে এখনো দুয়ারের
চৌকাঠের শিকলকে বন্দির পূর্ণস্বাদ দেইনি ।
আমি যে ঘরের রঙ টাকে এখনো বলি নি
তুমি রঙ!
এখনো বলি নি ঘরের মেঝেতে শুয়ে,,,
কেমন সুখ পেলে আমাকে ছুঁয়ে?
আমি যে অনঙ্গ হাড়িতে ভাত রন্ধন করে
এখনো তৃপ্তবুভুক্ষু হয় নি হাড়ির সম্মুখে,,,
আমি যে এখনো আয়না কে শিখায়ই নি কিছুই
আমা হতে!!


তাহলে?
তাহলে কীভাবে যাব তোর সাথে
গুহা থেকে গুহার নিম্ন দিকে?
আমি যে এখনো হাসতে জানি,,
আমি যে এখনো বন্যায় ভাসতে জানি,,,
লোনা জলে ঘন্টার পর ঘন্টা সাঁতরাতে জানি,,,
আমি যে এখনো লোহা দিয়ে লোহা কাটতে জানি,
এখনো  মুচকি হাসিতে চোখের জলের বক্ষ রোদন ঢাকতে জানি,,,,


জানি
প্রতিদিনের মত পাঠাতে অচিন নির্বাসনে তোকে!
যে খবর এনেছিস মৃত্যুর বাণী হয়ে
তা আমি প্রতিদিন পান করি
শ্বাস প্রশ্বাসের দরে!
সে হোক না মহামারী কিবা স্বয়ং যমদূত,,
তবু তারে বলছি আদেশে
আহা রুখো, এখানেই রুখো হে যমরাজ
আমি যে চোখের জলকে
আচ্ছা করে কাঁদাতে পারি,
বাচিবার দিন গুলিতে ইচ্ছেমত বাঁচতে পারি
মৃত্যুর সম্মুখেও ডুমুর তালে বাঁচতে পারি
জীবনের স্বাদ লয়ে।
যতই মৃত্যু পরোয়ানা আনো সম্মুখে
চোখের জল,,,তুমি কভু পাবে না আমাকে।


#############
রুবেল চন্দ্র দাস
প্যারিস
১০/১২/১৭