শুনেছি জন্মানোর সময় ঠাকুরমা ঠাকুরের সামনেই নিজ হাতে পায়েশ রান্না করে পাড়া শুদ্ধ খাওয়ায়ে  আমাদের নাম দিয়েছিলো লক্ষ্মী, সরস্বতী,,!!
আকাশে বাতাসে রঙ লাগিয়ে লিখে দিয়েছিলো
আমাদের নাম!হাড়ির তলা হতে হাড়িকেনের নিচ পর্যন্ত আমাদের নাম শুনে নিয়েছিলো শুভ্র বেশ...!
ওমান ফেরত বাবার ঘরে,,
প্রবাসী আতরের নিচে লুকানো দেশি পোশাকের ভাজে আমাদের মত দুটি জমজ বোন যে
লক্ষ্মী আর সরস্বতী,,তা সবাই বিশ্বাস করলেও
করেনি বোধহয় আমাদের অদৃষ্ট!!!


আর তাই এর পর থেকেই স্রোতের সাথে সাথে
স্রোতস্বিনী নামটিই হারিয়েছি নদীদ্বয়।কেন জানি
ঘরের টিনের চালার ছিদ্র টা দিনকে দিন হয়েছে বড়, আমাদের সাথে,,!আমাদের জীবনের বাকী দিন গুলির মতই বেশ নড়েবর হয়েছে বাবার
ভবিষ্যৎ কল্পনা আর কপালের রেখা!
যে রেখায় কথা ছিলো,,
এ বাড়ির উঠানে কেবল সুখ শুকানো হবে;গোলা ঘরে আবদ্ধ লক্ষ্মীর উপনামে!কথা ছিলো এ বাড়িতে একটি পতাকা ফত ফত করে উড়বে; সরস্বতীর প্রতিশব্দে। কিন্তু কি এক অমোঘ নিয়মে,,,
আমাদের চোখের সামনেই চোখ হারালো বাবা,,
আমাদের মুখের বুলি শিখার তালে তালেই
বদলে গেল সবার সকল বুলি,,
আমরা জানলামই না,,,
কবে, কখন,কেন আমাদের নাম হয়ে গেল
অলক্ষ্মী
কেবলি অলক্ষ্মী!!!
জানলামই না ,,,, হাড়িতে পানি সিদ্ধ হবার সাথে
আমাদের নাম হারানোর মিল কোথায়?
বুঝলামই না,,ঘরের দরজার সামনের শুকনো মাটি
কাদা হবার তালে তালে আমরা লক্ষ্মী কেন অলক্ষ্মী?
তাহলে সেদিনকার পায়েস,,,হ্যা হ্যা ঠাকুরমার রেধে দেওয়া পায়েসের কোন মূল্যই কি নেই ঠাকুর হতে মানুষের কাছে?
অনাহারে,অর্ধ্বাহারে, বেঁচে থেকেও কি
শ্বাস নেবার কোন অধিকার নেই আমাদের,
নেই নেই নেই কোন অধিকারই নেই
তোমাদের কাছে?
শুধু আছে প্রশ্নের শরশয্যায় শায়িত হয়ে
জিজ্ঞাসা করেই যেতে অব্যক্ত ভাষায়
সেই প্রথম নারী হতে ভবিষ্যতের যে কোন নারীত্বে,


তাহলে কি আমাদের অপরাধ?
কি আমাদের ভুল?
কি আমাদের অন্যায়?
তা কি জানতে পারি, বেঁচে থাকার নাম নিয়ে
মরে মরে?হয়তো,,কোনদিন পুতুল খেলি নি,,শুধু অবহেলা করেছি হজম;এক অপয়া পুতুল হয়ে,,!
কোন দিন ফেরিওয়ালা  দেখে করি নি কিছু দাবী
শুধু ঘৃনা না দেখার দাবী করেছি মনে মনে,,,।
কখনো ভাবি নি আয়নার সামনে দাঁড়াবো গুছানো চুলে!থালা ভর্তি স্বপ্ন খাবো ক্ষুধার নামে!
শুধু ভেবেছি কেউ যেন মানুষ ভাবে
এ জনমে!!"!


লক্ষ্মী নয় সরস্বতী নয়,,
কেবলি মানুষকি ভাববে কেউ আমাদের
কোন জনমে?