চারদিকে নীরবতা,,
কিছু পিঁপড়ে মুখে করে
এই বড় বড় মাটির দলা নিয়ে যাচ্ছে জানি কোথায়?
এর মাঝেই শোনা গেল তার বিয়ে হয়ে গেছে
যার সাথে তুই বাল্য খেলা খেলেছিলি
সে এখন অন্যের সাথে
সংসার খেলা খেলছে,,,,
সেদিনের সেই মাটির হাঁড়ি নয়
পিতলের হাড়িতে উনুনে উনুনে রাধছে সে,,,


সংবাদ টা শুনে চঞ্চল টুনটুনি আর লেজ নাড়াতে পারছে  না
সাপের জিহবাটাও গভীরে কোথায় যেন শান্ত,, বেশ ভারী।
কোন এক দৈত্য কোথা থেকে এসে যেন গায়ের উপর পড়লে বসে
সারাদিন সারা সময় কত মেয়ের সানাই শুনি,,
কই তখন তো ওরা আসেনি,,,
তাহলে,,,,?


যেদিন মেয়েটির সাথে আমার এই পুস্তকের ভুমিকা
লেখার হয় শুরু,,
তখন আমরা একসাথে গোবর কুড়িয়ে রেখেছি,,,
বাঁশের এক সুন্দর ঝুপরিতে।
চারদিকে অবহেলার চোখ গুলোকে নজর বন্দি করেছি
হাসিতে হাসিতে,,,
যখন আমরা সারাদিন হারিয়ে যাওয়া একটা গরুকে খুঁজেছি
সেদিনো আমরা জানতাম না,,
একদিন আমরাই হারিয়ে যাব,,একে অপরের থেকে।
সবচেয়ে ভিন্ন গ্রহে যে অজানা প্রাণ থাকে,,
তার চেয়ে বেশি দূরে যাব চলে,,,
গিয়েছি আমরা,,,,,


যে জায়গায় যাওয়ার কথা নয়,,,
সেদিন দুটি শিশু হয়ে গিয়েছিলাম,
,লত,গোবর,ঘাস,ফুল এর টানে
আর আজ,,
এত দূর, এত বিসর্জিত সাগর জলের পাড়ে
চলে গিয়েছি দুজন দুদিকে,,,
কেন?
সেতো আমাকে কাকুই ডাকত,,,,
আজ কাকু শব্দটার অভিধান যখন মস্তিস্কে,,,
তখন কে ডাকবে এমন করে কাকু আমাকে?


কে আমার পড়ার টেবিলের পাশে
ছোট্ট দুটি হাত নিয়ে দাড়িয়ে বলবে,,
কাকু পড়,,মন দিয়ে পড়,,,
আকাশে যে ছুঁতে হবে তোমাকে,,
পাহাড়ের শিরে যে বাসা বাঁধতে হবে তোমাকে,,
সর্বনাশী হাওরের ঢেউ যে ভাঙ্গতে হবে তোমাকে,,


আমি ভেঙ্গেছি; বাল্য কালের বাল্য নেশা ভেঙ্গে
কেবলি পড়েছি,, ,
আর সে
কচি হাত দিয়েই কচি সবজি কেটেছে শক্ত দাঁতের তরে
উঠানে ঝাড়ু দিয়েছে,,
হাড়ির শক্ত কালি তুলে নিয়ে নরম হাতে।
আমি পড়েছি,,,সে আমার জন্যে চা বানিয়েছে ঠান্ডা জলে
আমার জন্যে মুড়ির বুকে লুকিয়ে রেখেছে চিনি
আমি পড়েছি,,
পড়ে পড়ে আলয় থেকে বিদ্যালয় ছুঁয়েছি,,
কিন্ত কই তার জন্যে তো কিছুই ছুই নি,,
তার জন্যে তো আমি এক গ্লাস জলও হাতে নিয়ে দাঁড়াই নি,,
লুকিয়ে রাখি নি সামান্য লবণও ভাতের থালার কোনে,,,!!
কেন?  
আমি কি স্বার্থের সাগরে নাও ভাসিয়েছি,,,
ক্রমান্বয়ে চলে এসেছি দূরে,,,
আর ভুলে গিয়েছি তারে,,,
আমার অকৃত্রিম যুথিকা বাল্য বন্ধুটিরে।


########################
রুবেল চন্দ্র দাস
প্যারিস
১৬/১০/১৭