শত শহীদের রক্তে ভেজা , এই বাংলার কাদামাটি ,
শস্য - শ্যামল সোনা ফলা , এই বাংলার কাদামাটি ।
এই বাংলা তুমি আমার চির দুঃখিনী মা ।
তাইতো এই বাংলা ছেড়ে অন্য কোথাও
এই মন যেতে চায় না ।
এই বাংলার কাদামাটির তরে
প্রান দিয়েছে লক্ষ শহীদ মুক্তিসেনা ।
এই বাংলার লাল - সবুজ পতাকায় ,
মিশে আছে কতো ভাই - বোনের মমতা ।
এই কাদামাটির তরে , আমার প্রাণ যে কাঁদে ,
এই বাংলার তরে, দুনয়নে অশ্রু ঝরে ।
কেমন করে তোমার দুঃখ ঘুচাবো ?
কেমন করে তোমার মুখে হাসি ফোটাবো ?
বাংলা মা , তুমি একবার বলে দাও না ।
এই বাংলার সবুজ গাঁয়ে , নিশীত রাতে
আম কাঁঠালের বনের ফাঁকে ...
রুপ কথারই চাঁদের বুড়ি জাগে ঐ নীল আকাশে ,
আঁধার রাতে , বাঁশ বাগানের ফাঁকে ফাঁকে ,
ক্ষণে ক্ষণে ঝিলমিল - ঝিলমিল জোনাক জ্বলে ।
নদীর তীরে সারি সারি কাশ ফুল ,
শ্যামলী ছায়ায় ছড়িয়ে আছে আরো কতো ঘাস ফুল ।
শরতের আকাশের গোলাপী রঙ
রুপালী সূর্যের রুপালী কিরণ ,
হলুদ রাঙ্গা শস্য ক্ষেতে , মন যে আমার যায় যে ছুটে ।
অগ্রহায়ণে মাঠে মাঠে সোনালী ধান ,
দেখে দেখে জুড়ায় আম্মার প্রাণ ।
হাসন , লালন জারি সারি বাউল গান ,
জুড়িয়ে দেয় আমার অবুঝ প্রাণ ।
দূর হয়ে যায় মনের যতো অভিমান ,
সুপ্রভাতে শুনি যখন পাখ - পাখালীর কলতান ।
বৈশাখ - জ্যৈষ্ঠের ফলের মধু মাসে -
যাই যে আমি ভালবেসে ।
কুয়াশায় ভরা শীতের সকালের
খেজুরের রস আর তালের পিঠের
ঘ্রান লেগে থাকে গাঁয়ের সবার মুখে ।
আমার সবুজ গাঁয়ের পথটি ধরে ,
রাখালিয়া বাঁশির মধুর সুরে ,
মন আমার হারিয়ে যায় কৃষ্ণচূড়া নদীর তীরে ।
শ্রাবণ মেঘের দিন বারে বারে ফিরে আসে ,
সাদা - কালো মেঘ উড়ে ঐ নীলাভ আকাশে ।
যদি কখনো হই অশ্রু সজল ,
দেশ তোমার মমতার আঁচল ...
আমায় পরায় ভালোবাসার কাজল ।
এমন মধুর ভালোবাসা কোথায় পাবো ?
তোমায় ছেড়ে মাগো আর কোথায় যাবো ?
দেশ তোমার তরে আছে শুধু
বুক ভরা ভালোবাসা আর নাড়ীর টান ।
দেশ তোমায় ভালোবেসে ভুলে যাই সব অভিমান ।
এই বাংলার তরে সদা কাঁদে আমার মন ও প্রাণ ।
যেদিন আমি হারিয়ে যাবো অচিন পুরে ,
এই স্বদেশ তোমার তরে থাকবে পড়ে
আমার ভালোবাসার কবিতা ও গান।
এই বাংলার কাদামাটি ও বাংলা মা ,
আমায় কখনো তুমি ভুলে যেওনা ।