একটানা ঝর ঝর করে ঝরে পড়ছে-বৃষ্টির পানি,
আমার লাগোয়া ঘরের বারান্দায়, বাহিরে বাড়ানো হাতে
ধুয়ে মুছে দিচ্ছে কতগুলো পুরনো দুঃখ অনিমেখে,
এক মহাকাব্য লেখার কথা ছিল; আমাদের প্রণতির ভালোবাসার এ এক অপূর্ব মোহমায়া, তা পুরায় না
কেবলই ফিরে ফিরে আসে কোন নতুন মোড়কে।


ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়ছে আকাশের বেদনার জল
তাতে যে নোনতা স্বাদ মিশে আছে সেটা তো আমার,
হয়তো তুমি পরখ করতে পারবে না, পরিমাণে এতো
সেটা বরং সাগরে গিয়ে মিলেমিশে হোক একাকার।


এক খন্ড আবাদি ভূমিতে থেমে থেমে জোয়ার আসে
লাঙলের ফলাও জানে, এ যে ফসলের আগমনী বার্তা,
বৃষ্টির চেয়ে এ কথা কে বেশি জানে;
তোমার শরীরের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে বীজ বুনেছি
কঠিন জোয়ারে দুকূল চাপিয়ে উপছে উঠে আসে
বৃষ্টির চেয়ে ভালো কেউ জানে না,
জানে না কি এই ভালোবাসার মানে।


বৃষ্টি কী শুধুই বেদনার ভারে নুড়ে পড়া হিজলের ডাল
সেখানে কী কখনো আহ্লাদে আটখানা হয় মহাকাল।
গোলাপের যে মিছিল নেমেছিল বকুলের সমর্থনে
গন্ধরাজের বাগড়ায় থেমে থেমে চলে কোন কোণে।
বরং তোমার কোঁকড়ানো চুলের মতই কদমের সংসার
ঝুম বৃষ্টিতে ও পরোয়া করে না, কেমন নির্বিকার!


অনিমিষে জলের দিকে তাকিয়ে থাকে যে মাছরাঙা
সে ও নাকি ডুবে ডুবে জল খেতে চায়-
ঝুপ করে গা ভিজিয়ে আর কতকাল জীবন চলবে
এবার হোক নিজের একান্ত বসত ডাঙায়।


জ্বল জ্বলে চোখের যে হুতোমপেঁচা শিরিষের ডালে বসা
রাত্রির কাল তার বড় ভালো লাগে; সে যে নিশাচর,
তার মতই জেগে হয়তো ইঁদুর খুঁজবো শরীরে তোমার
এক নিশাচর পাখির মত চেনা গলিতে শুকবো খাবার।


গলির মুখে ঘেউ ঘেউ করা কুকুরটা বড্ড বেহায়া
আশ্বিন মাসে তাকে থামিয়ে রাখা দুষ্কর;
এই যে ব্যবচ্ছেদ প্রতিটি চেনা জিনিসের মাঝেও
এর বাইরেও ভালোবাসা বেঁচে থাকে, খুব গোপনে
কোন এক অন্ধ কুঠুরির গোপন কোণে, আলোতে নয়
সেখানে হয়তো সবায় যেতে পারে না, বন্ধুর পথ
এ যে বহু সাধনায় পেতে হয়, এ তো নারীর হৃদয়।


আজও বৃষ্টি নামে, কোন নতুন প্রেমের বারতা নিয়ে
হয়তো কাব্য কথা লেখা হয়, চিঠি আসে নতুন খামে
যে মহাকাব্য লেখার কথা ছিল তোমার-আমার নামে
তা প্রিয়হারা রমণীর কান্নার ন্যায় অভিমানে ঝরে
গোপনে, খুব গোপনে।
সে খবর তোমার কাছে হয়তো পৌঁছায় না এত দূরে
আমি আজও লিখি, খুঁজি তোমায় ওই আসমানে।


রুবু মুন্নাফ
২৪-০৭-২০১৮
দক্ষিণ বনশ্রী, ঢাকা।