এই হৃদয়ে আর ঝরবে না বসন্তে
রররেন্ড্রন প্রেয়সীর আঁচলে।
এই হৃদয়ে ভাঙ্গা মন্দিরের দেয়ালে আজ আশ্রয় নেয় অসংখ্য নাগ- নাগীন।
অথচ এই হৃদয়ে প্রেমের অর্চনা হত কত স্নেহে!
সেই কবে দেবীর প্রতিমা ভেঙ্গে চলে  গিয়েছে ক্রুদ্ধ পুরোহিত!
আজ সে অবিশ্বাসী মহানাস্তিক!
এই হৃদয়ে আর জোসনা দেখা হবে না প্রেয়শীর কাঁধে মাথা রেখে নীলনদ কিংবা দানিয়ুবের তীরে।
নক্ষত্র ছুঁয়ে দেখার বাসনা জাগবে না সাহারার বুকে।
মাদকতা জাগাবে না হৃদয়ে প্রেয়শীর চুলের গন্ধ বা কালো টিপ।
কিংবা ঠোটের নিচের কালো তিল!
এই হৃদয় এখন কেবলই নিকষ অন্ধকারের যোনীগহ্বর।
এখানে ফুলশয্যা সাঁজে অপদেবতার...
রাতের নিকষ আধাঁরে ডেকে ওঠে ট্রানসেলভেনিয়ার হায়েনা।
এই হৃদয়ে রোজ ঘুড়তে আসে শয়তানের পিতা লুসিফার।
শ্রদ্ধা ভরে নতজানু হওয়ার বাসনা জাগে এই হৃদয়ে মানব শয়তান খ্যাত হিটলারের সমুখে।
তবু এই হৃদয় ঠুকরে কাঁদে হাইড্রোজেন বোমায় ঝলসে যাওয়া শিশুর মুখ দেখে।
গভির মমতা অনুভব করে বেয়নেটের খোঁচায় ক্ষতবিক্ষত সৈনিক এর বুক দেখে...
তবু এই হৃদয় প্রেম খুঁজে পায় ইহুদী অষ্টাদশী'র তরল চোখে।
কমিউনিস্ট শহিদের মৌন চিৎকার শুনতে পায় এই হৃদয়।
এই হৃদয় জানে কেন সেই কৃষাঙ্গ যুবক হাতে তুলে নিয়েছিল মারণাস্ত্র,
দেদারসে ছুড়েছিল গুলি স্কুলের শিশুদের উপর।
তবু এই হৃদয় জানতে চায় খুনের দায়ে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামীর শেষ ইচ্ছা।
এই হৃদয় জানে মাঝবয়সী বেশ্যা হাতে গোলাপ তুলে নিয়েছিল শেষবারের মত কত অভিমানে।
তবু এই হৃদয় ছোঁবে না প্রেয়সীর কোলের কোমল উষ্ণতা।
এই হৃদয়ে আজ ইউরেনিয়াম এর তেজস্ক্রিয়তা,
যে তেজস্ক্রিয়তা ঝলসে দিয়েছিল হিরোশিমা।
আর কখনো ইচ্ছে জাগবে না প্রেয়সীর কাঁধে মাথা রেখে বসে থাকবার তারা ভরা রাতে ইজিপশিয়ান পিরামিডের দেয়ালে।
ইচ্ছে জাগবে না আর পড়ন্ত বিকেলে লন্ডনের কোন সিমেট্রিতে হাত ধরে হাটবার।
এই হৃদয়ে কোমল আদ্রতা ঢেলে দেয় তরল স্বচ্ছ ভদকার গ্লাস।
এই হৃদয় মুঠোয় নিয়ে ঘুমায় পটাসিয়াম সায়ানাইড রোজ রাতে।
গভির ঘুমের আস্বাদে লালিত এই হৃদয়।
ভোরের আলোর মূর্খ উচ্ছ্বাস দেখার ইচ্ছা তার হয়না।
এই হৃদয়ে প্রেয়শী ঘুমিয়ে আছে লিলিথের কোলে মাথা রেখে।
তুষারের মত ঝরে শিউলী ফুল তার কাফনে।