কাজের কথা শুনলে ধরে, জিনিস নেওয়ার ছুতো
না পেরে বাবা তাকে কিনে দিলো জুতো।
অভিমানের পরে মনে তার আনন্দ এলো বেশ
জুতো পেয়ে কেটে গেলো, ছুতো-নাতার রেশ।


মাঠে-ঘাটে সব সময় রাখে তারে সাথে
শোয়ার আগে ধুয়ে-মুছে শিতানে রাখে রাতে।
মনে কি চাইলো একদিন, গেলো গাঙের কাছে
গিয়ে দেখে তীরে একটি কলার ভেলা আছে।


বেড়া থেকে ডাল ভেঙে তৈরী করলো চৌড়
তারপর ভেলায় দু'পা তুলে মাঝে দিলো দৌড়।
চৈত্র মাস গাঙে তখন পানি ছিলো খুবই কম
ভেলা ভাবলো আমার পিঠে উঠেছে আজ যম!


বসে খানিক চালাবার পর উঠে দাঁড়ালো ভেলায়
টলতে টলতে গেলো উল্টে চৌড়ের এক ঠেলায়।
এক পা গেলাে কাদার নিচে আর এক পা উপুর
জুতো খুঁজতে খুঁজতে তার হয়ে গেল দুপুর।


জুতো পায়ে ভেলা চড়া ভেঙে গেলো মাস্তানী
সেটা কি আর পাওয়া যায়! গাঙে গলা পানি।
ভেলাটা তখন ভাসিয়ে দিয়ে ছুড়ে ফেলল চৌড়
মনের দুঃখে ডাঙায় গিয়ে দিতে লাগল গৌড়।


বাড়ি না গিয়ে পালালো খড়ের গাদার আড়ে
গোসল করতে এসে তাকে কেহ কেহ নাড়ে।
বাবার জন্য হাটে নিয়ে যেতে হবে ভাত
মায়ের ভয়ে গাঙের তীরে হয়ে রইল কাত।


এদিক বিকেল হয়ে গেছে, মা বেরিয়েছে খোঁজে
বাড়ি হয়ত খবর গিয়েছে, অনুভবে সে বোঝে।
ভয়ে সেদিন বোকা ছেলের জান করছিলো ধড়ফড়
মা এসে গোটা কয়েক মারলো পিঠে চড়।


তারপর কান মলাসহ বকা দিলো কত
আরও কত কিছু বলে হলেন মা নিব্রত।
শুনে, ভয়ে-লাজে খোকা বাড়ি গেলো সোজাসুজি
বোকা ছেলে সে দিনগুলি-করে আজও খোঁজাখুঁজি।


রচনা : ১২.০৪.১৯৯৭ খ্রিঃ