শিমূল বনের পাশের গ্রাম
মিলন পুকুর জানি,
শীত-গরমে বয়ে যায়
গায়ের ছোট্ট পুকুর খানি।


নদী আমার বেজাজ প্রীয়
শালুক ভরা পাড়,
একটু সুযোগ পেলেই খুলে দেই
মনের বন্ধ করা দ্বার।


সেদিন হঠাৎ নীল শালুকটি
ধাঁধালো মোর চোখ,
কি অপরূপ রূপ তার
কি অপরূপ ঠোট।


পরের দিনো সেই সময়ে
ফুলের অপেক্ষায়,
প্রেমে তার পরে গেছি
শতেক বাহানায়।


হঠাৎ দেখি সখী গনে
পুকুর ঘাটে আসে,
জলকে তারা আদর করে
গঙ্গা মায়ের বেশে।


পরনে তার হলুদ শাড়ী
মুখে রবি গান,
চোখদুটি তার কাজল কালো
টেনে নিয়েছে মোর প্রান।


কোটর থেকেই দেখি আমি
সামনে নাহি যাই,
সামনে গেলেই যদি তার
চোখের বালির আসন পাই।


সন্ধা-রাতে কলম হাতে
কাব্য লিখার ছলে,
তার মুখটি ভেসে ওঠে
ডাইরির পৃষ্টা দলে।


নিশীত-রাতে চোখ বুঝে
পড়া দিয়েছে ঘুম
সেই শালুকটি আমাকেই শুধু
করে রেখেছে নি:ঘুম।


রাতের শেষেও ঘুম আসেনা
একলা জেগে রই
কেউ আমায় বলো দেখিনি
আমার স্বপ্ন পরী কই!


দৌড়ে যাই শালুক ঘাটে
দেখবো বলে তাকে
পথের মাঝে দুষ্টু হাওয়া
শুধু তারই ছবি আঁকে।


ঘাটের পাড়ে একলা সে
শালুক নিয়ে খেলে,
গাছের পাছে দাঁড়িয়ে দেখি
আমি এক্কেলে।


খেলনা বাটি হাতের পরে
তাহার মাঝে বালি,
তার চোখের নীচে আজ কেন,
বসত করেছে কালী।


দৌড়ে গেলাম শালুক দিঘীর
শালুক রানীর কাছে
তাহার চোখের জল দেখে
আমার চোখ কাঁদে পাছে।


কি হয়েছে সখী তোমার
চোখে কেন জল?
বসত করেছে চোখে কেন
কালো কালির দল?


কাঁদুনে সুরে বললো কেঁদে
রানী করেছে রাগ,
তাইতো রাজা রাগ করে
ঘড় ছেড়েছে আজ।


কিন্তু সখা তুমি কে
দেখিনিতো কোন কালে!
গ্রামে তুমি নতুন বুঝি
তীল কেন তোমার গালে!


আমি এক অভাগা সখী
শালুক বাসি ভালো
সখী, সে যে সুন্দর চায়
কিন্তু আমি বড্ড কালো।


কথা দিতে পারি সখী
একটু বিশ্বাস করলে,
তোমার রাজা দেব খুজী
বন্ধু বেশে আমার হাতটা ধরলে।


সত্যি বলছো দেবে খুজে
রানীর হারিয়ে যাওয়া রাজা,
রানী সে যে বড্ড দুঃখী
তার মনের সুখ গুলো আজ বাজা।


দেব সখী দেব
তোমার রানীর রাজা খুজে
আমারেও সখী নিও তুমি
একটু নিজের মতন বুঝে।


হাতের ওপর হাতটি রেখে
রাজার খোজে যাই
অচিন দেশে রাজা গেছে
সে দেশ যে আমার চেনা নাই।


অবশেষে পেলাম আমি
পুতুল রাজার দেশ,
রাজা পেয়ে বড্ড খুশী
রানীও আছেন বেশ।


রাজা রানীর বে হলো
শালুক আজ বড্ড খুশী,
আমি আজ হাওয়া হয়ে
এই শালুককেই ভালোবাসি।


হঠাৎ করে হাতটি ধরে
কেঁদে ওঠে শালুক রানী,
সখা তুমি সত্যি ভালো
মুছে দিলে মোর চোখের পানি।


চুপটি করেই নেচে উঠি
মুছিয়ে দেই তার অশ্রুখানি,
আপন মনের বলি তারে,
তুই যে আমার শালুকরানী।


একটি কথা কইবো সখা
রাগবে নাতো তুমি?
রাগ যে আমার মোটেই নাই
তা নিজেই বলি আমি।


মনের মাঝে উঠার পাথার
কি বলে কি বলে!
মুহুর্তের সেই সময়টাও
খুব ধীর গতিতে চলে।


হতে পারো তুমি কালোর রাজা
হতে পারো তুমি কবি
কিন্তু সখা তুমি যে আমার
ভোর সকালের রবি।


মেয়ের মায়া বড়ো মায়া
কিছুই বোঝা যায় না,
রাত-দুপুরে সূর্য দেখি
রামধনুও বাদ যায় না।


কৌতুহলেই বলি তারে
কি বলিছ সখী,
বুঝিতে পারিনা আমি তোমার
মায়া ভরা দুটি আখি।


মুখ ফিরিয়েই উধাও হলো
মায়া ভরা সে রাতে
তাকে দেব বলে নীল শালুকটি
পরে রইলো মোর হাতে।


দুপুর-রাতে ঘুম আসেনা
শুধুই তাকে দেখার ইচ্ছে
তার বলা কথা গুলো খুব
মনের দরজায় কড়া নাড়া দিচ্ছে।


পরের দিন হঠাৎ ঘাটে
দাঁড়িয়ে ছিল সে
আমায় দেখে কাছে এলো
সেই মায়াবিনী মেয়ে।


তোমাতেই ভাসি সখা আমি
তোমাতেই যাই-আসি,
তোমাকে আমি জোৎনা থেকেও
বেশি ভালোবাসি।


অবাক পানে চাই
আমি তাহার মুখ পানে
আমার সুরই শোনালো সে
আমার লিখা গানে।


হাতের ওপর হাত রেখে
নৌকা চড়ি যাই
সত্যি বলছি এমন সুখ
সারাজীবনে কভু পাই নাই।