তুমি কি জাগবে না?
আর কতকাল,কত লক্ষ হাজার বছর তুমি
তুমি স্বপ্নহীন ঘুমে কাটাবে?
মানুষত ক্লান্ত হয়।
তুমি ক্লান্ত হও না, ক্লান্ত হয় না তোমার শ্বাস - প্রশ্বাস
আর তোমার ঘুম।ক্লান্ত হলেও ত একবার জেগে উঠতে।


অপলক চেয়ে আছো নির্দয়-বহমান সময়ের পানে
তবুও তোমার চোখ ক্লান্ত হয় না।
ক্লান্ত হলেও ত একবার পাপড়িগুলো নড়ে উঠতো।


ঠায় বসে আছো। না ঘুমে, আর না জেগে
তাতেও তোমার ক্লান্তি নেই।


সেদিন, ঠাকুরদার ছেলেটাকে কে যেন একটা থাপ্পড় মেরেছিলো
হাতের পাঁচ আংগুলের দাগ পড়া ত দূরে থাক
ছেলেটা থাপ্পড়ের রেশ বুঝে কান্না শুরু করার আগেই
পড়শিরা কান্না শুরু করে দিলো। সে এক বিলাপ সুর!
তোমারও নাশিকাগুঞ্জন শুনা গিয়েছিলো সেই সুরে।


তারপর একদিন, এক বড়ুয়ার গায়ে
পথ চলতে পিছলে গিয়ে ছিটকে কাদা লেগেছিলো,
ছিঃ ছিঃ করে উঠলো সকলেই।
জীব হত্যা মহাপাপ বলে এক বালতি পানি নিয়ে
ছুটে এলো আরেক পড়শি। আর তুমি ধুয়ে,মুছে ছাফ করে দিলে।


এক পাদ্রীর মাথা থেকে টুপিটা পড়ে গিয়েছিলো সেদিন।
মেঘের ঘনঘটা ছিলো না, ছিলো না দমকা বাতাস কিংবা মৃদুমন্দ
তবে কেন টুপি পড়ে যাবে?
দুনিয়াজুড়ে হাহাকার,চিৎকার আর রোনাজারি।
নিশ্চয় কেউ মুখের ফু দিয়ে এমন অন্যায়ের জন্ম দিয়েছে।
কে সেই নরাধম?  


সারা দুনিয়ার তাবত শক্তি নড়ে-চড়ে উঠে
এক নরাধমের কাল্পনিক অন্যায়ের বিহিত ব্যবস্থায়
কতশত বনি আদমকে বলি দেয়া হয়।তবু তুমি জাগলে না।


আব্দুর রহমানের মক্তব পড়ুয়া ছেলেকে ধরে নিয়ে গেলো
পাষন্ডতার নির্মম করাঘাতে কুচি কুচি করা হলো
নরম তুলতুলে শরীর থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত গড়ালো
কেউ কোনো কথা বললোনা!
ওদের জন্য দুনিয়া বুক চাপড়ালো
মক্তব পড়ুয়া ছেলেটার জন্য কেউ দু'ফোটা পানি ঝরালো না।
তুমিও জাগলে না।


তুমি জাগলে না
তোমার চোখের সামনে নিরীহজনের সলীল সমাধি দেখে
পৃথিবীকে পৃষ্টদেশ দেখিয়ে পড়ে থাকা বোনের জন্যে
মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা অবুঝ শিশুর মমতায়
নদী-সাগরে পানির লাল বর্ণ দেখে
চুপ চুপ রক্তে মাটির আকার বদলে যাওয়া দেখে
পৃথিবির বুকে অসহায়জনের করুন রোদনে।


তারা শান্তি প্রতিষ্টা করবে রক্তে,মানুষের রক্তে
মুসলমান মানুষের রক্তে।
শান্তি প্রতিষ্টায় খুবই সুষম মুসলমানের রক্ত।
তাই মুসলমানের রক্তে পৃথিবী লাল হলেও তুমি ভাবলেনা,
তবু তুমি জাগলে না।