দেখে এলাম খুব সকালে জগ্যো দাদুর বাড়ী,
কলা গাছের ডগায় বাঁধা কাজের লোকটা তার-ই।
একটা ছাগল তিড়িং বিড়িং লাফায় শুধু বেশ,
বালিশ পেতে কুকুর শুয়ে চাটে আপন কেশ।
দুই বছরের লেংটা ছেলে কেঁদে কেঁদে খুন,
জগ্যো দাদুর ছোট বউয়ে সালুনে দেয় নুন!
মেঝো বউয়ে স্নো মাখে, জানেনা সে রাধা,
ছোট মেয়ে খাটের নিচে পলো দিয়ে বাঁধা!
বিড়াল ছানা নয় তো ওটা এ সংসারের বাতি,
তওবা কাটো, ভাবলে বুঝি জগ্যো দাদুর নাতি?
একটু দূরে পাড়ার দর্শক জটলা করে আছে,
জগ্যো কেন খুব সকালে ধূলায় পরে মিছে!
বড় বউটা ফ্যাত কাঁদুনে, বিলাপ করে সখে,
জগ্যো মরলে এ সংসারে দেখবে কে আর তাকে।
জগ্যো দাদু কলা খেয়ে মাথায় দিলো হাত,
কেমন করে গেল চুরি জগ্যো দাদুর দাঁত!
জগ্যো বলে পুলিশে দে, শালা হাবুরাম,
কলা দিয়ে দাঁত ফালানো নয়া অপকাম!
গাছের সাথে বেঁধে রাখলে কি আর হবে মিছে,
মুগুর দিয়ে দু-চার ঘা লাগাস না কেন পিছে।
দিন দুপুরে খোয়া গেল আস্তো দু-টি দাঁত,
এমন চিন্তা মাথায় নিয়ে কেমনে কাটবে রাত!
কাজের লোকের বিচার হবে, রাগলো জগ্যো দাদু,
গাঁধার পিঠে আসলো পণ্ডিত পাড়ার নিমাই সাধু।
নিমাই সাধু শুনল সবই চশমা এঁটে নাকে,
সাক্ষী দিবে এই ঘটনা ডেকে আনো তাকে।
কাজের লোকে কলা দিয়ে মারবে ভদ্রলোক!
নিমাই পণ্ডিত কেমনে চাপে এমন কঠিন শোক।
জানা গেল জগ্যো যখন কলা পুরলো গালে,
হুলো বিড়াল সাক্ষী ছিল, বসা টিনের চালে।
খানিক ভেবে নিমাই সাধু বলল, আনো কলা,
দু’ই এক কাদি খেলেই তবে আপনি যাবে বলা।
কাদি কাদি কলা খেয়ে করল সবই শেষ,
কেউ বা আবার আপন মনে বলল, “রে! বেশ, বেশ!”
মিষ্টি স্বাদের কলা খেয়ে দাঁত পরে না কারো,
নিমাই সাধু বলল তবে কলা আনো আরো।
সাগর কলা, কবরি কলা, কলা মর্তমান,
কলা খেয়ে কাজের লোকের ভাংল অভিমান।
কলা খেয়ে অবশেষে সবই গেল জানা,
আপনা আপনি দাঁত নড়িলে কলা খাওয়া মানা।