গাঁয়ের পথে
বেগম সেলিনা খাতুন


বসন্তের শেষ প্রহরে,কোলাহল মুক্ত একটি গাঁয়ে
আমরা কজন এলাম শহর ছেড়ে
পিঞ্জরের পাখিটা ভয়ে  করছে ছটফট
কেমন করে পারি দিব অপ্রশস্ত পল্লীপথ।


অরণ্যের ঘন বন-বনান্তরের মগডালে বসে
ডাকছে কোকিল করুন কুহু কুহু সুরে
দাও দেখা সখি, অপেক্ষায় বসে আছে
সবুজ বনের অন্তরালে তোমার পড়শি।


পাখির কলরবে মুখরিত শিশির ভেজা ভোর
গাঁদাফুলের সৌরভে,বাড়ীর আঙ্গিনা কড়িডোর।


আঙ্গিনায় শুকনো পাতার মরমর
দিঘিটা জল শূন্য বুকে হাহাকার
হিমেল হাওয়া বইছে ক্ষণে ক্ষণে
প্রজাপতির রঙিন পাখা দোলা দেয় মনে।


জ্যোৎস্নামগ্ন রাতের আঙিনাতে
হাটু মুরে বসে কজন দুব্বা ঘাসে
গান করছে মনের হরষে
আউলা ঝাউলা বাউলের সুরে।


গাঁয়ের প্রাসাদ খানি চাঁদের আলোয় যায় দেখা,
অনাদরের গ্রাসে,গজিয়েছে আগাছা -পরগাছা
বাঁশঝাড়ে হু হু করে বাতাসের সুর
নীল জ্যোৎস্নায় ঘ্রাণ ছড়ায় আমের মুকুল।


আমরা কজন থমথমে আকাশের নিচে
পড়ি গোলকধাঁধায় চৌরাস্তার মোরে এসে
ফাল্গুনের শুষ্ক মৌসুমে মরা দিঘির পারে
ফুলে ফুলে ভরা পত্রালিশোভিত বৃক্ষ
চোখ জুড়িয়ে মন ভরিয়ে অন্ধ প্রণয়ে মুগ্ধ।


হঠাৎ আকাশ ঢেকে দিলো কালো মেঘে
জোনাকির দল প্রদীপ হাতে দাঁড়ালো এসে  
আলোয় আলোয় ভরে দিল জোনাকি
এ যেন স্বর্গীয় এক নুতন পৃথিবী।