ভাবনা থাকে সবার মনে, বড় হবো একদিন,
সবার মতো আমার ও আসবে আরো সুদিন ।
ছোটবেলায় স্বপ্ন দেখি, কত পাব খেলনা,
কৈশোরে স্বপ্ন দেখি, বন্ধুদের থেকে কি বেশি পেলামনা ।


যুবক হয়ে স্বপ্ন দেখি, করব দেশের উন্নতি,
চাকরি পাই, একটা ভালো, যেন রাতারাতি ।
ভালো খাবো - ভালোবাসব, বিয়ে করব সুন্দরী এক যুবতী,
সমাজ গড়ব, দেশ গড়ব - করব বন্ধুদের নিয়ে মাতামাতি ।


বয়স হলো চালিশ, শরীরে করি মালিশ,
ভাবি - ভোটে লড়ব, শাসন করব, গ্রামে করব সালিশ ।
পঞ্চাশ এলো, হিসাব হলো, কতো পরিবার আর পড়শীর কথা,
ছেলে মেয়ে হলো না মানুষ, টেনশনে শুধু মাথাব্যথা ।


স্বপ্নে বিভোর,  আসবে বৌমা আর গুণবান জামাই,
বেটা-জামাই রোজগেরে হবে আর কোনো চিন্তা নাই ।
ওমা একী কথা ! সেদিন - বেটা আনলো বউ একটা,
পুরুষের মত কাপড় পরে, কী যেন পোশাকের নামটা ।
কাজেকর্মে মন নেই - শুধু কিচিরমিচির দিনরাত,
সারাদিন চ্যাট মোবাইলে, রাঁধে চিকেনচিল্লি আর গরমভাত ।


জামাই এলো স্যুটেড বুটেড, চোখে রঙিন চশমা,
আমার মেয়ের নাম রেখেছে নতুন, প্রিয়তমা আর রেশমা ।
রোজগেরে আমার জামাইসোনা, নেশা করে মাত্র অর্ধেক বেতনের,
সকাল সকাল উঠে তখন, শোনেনি যখন বার-নটির কীর্তনের ।


ষাট হলো, নাতি নাতনি হলো, সবাই ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্র-ছাত্রী ।
দিনকাটে তাদের স্কুলে ঘুমের ঘোরে - বই পড়ে সারারাত্রি ।
ডাক্তার হবে ইঞ্জিনিয়ার হবে - উকিল, অফিসার, অধ্যাপক,
ঘুষ দিলে সবই পাবে  - চারিধারে বসে আছে যে অনেক ভক্ষক ।


সত্তর হলো, পূরণ হলো, একশ শতাংশ স্বপ্ন,
দেখলাম আমি হয়ে গেছি এক, দেশের মস্তবড় রত্ন ।


আশিতে যখন স্বর্গে তখন, দিচ্ছে ফুলের মালা,
আনন্দে-উচ্ছ্বাসে ভগবানকে, দেই দুটো বাতাসার ডালা ।
মালার ভারের ঘোর কাটিয়ে, পড়ে যাই যখন খাটের নীচে,
বাস্তবে হলো কোমর ভাঙ্গলো, রাতের স্বপ্নটা ছিল একেবারে মিছে ।