পূজনীয়া মা, তোমার সাথে অনেকদিন কথা হয়নি,
তাই বসে লিখছি চিঠি, সময় করে পড়ে নিও,
প্রথমে আমার আর মুনু'র শতকোটি প্রনাম নিও।
বাবা ভালো নেই,  গরম ভাত দেয় - কখনো কাঁচা কাঁচা থেকে যায়,
কখনো কখনো পচর পচর করে ফেন ও রেখে দেয়,
ভালো করে রাঁধতে শেখেনি, তুমি তো বাবাকে শিখিয়ে যাওনি।


পরশুদিন বাবা কি করেছিল জানো!
গরম জলে চাল দিতে ভুলে গেছিল, বাবা গেল অফিসে বিনা টিফিনে,
আমাদের দিয়েছিল বিশ টাকা, তাই দিয়ে দুজনে ছোলাভাজা কিনি,
স্কুলের কাছে ওই দাদুর দোকানে, ছ্যা সব কালো কালো আর ম্যাড় ম্যাড়ে গুলো,
খেয়ে মুনুর তো জিভ কেটে রক্ত বেরোলো,
দাদুটা বলল; কি রে, তোর্ মা খাওয়া শেখায় নি !


আমার খুব রাগ হয়েছিল, দিলাম দাদুর মুখে ছুঁড়ে,
তাই ভাবলাম, তোমায় লিখি সব কথা,
আর কাকে বলি বলো, বাবা আসে সেই সন্ধ্যেবেলা,
গল্প করার লোক নেই, কাজের মাসির জ্বর হয়েছে,
আসেনি অনেকদিন, তাই পেট পুরে খাইনি কয়েকদিন,
বাবা তো রাঁধতে জানে না, একদিন এসে তুমি, শিখিয়ে যেও না মা !


বাবা বলেছিল, তুমি নাকি তারা হয়ে গেছো,
তুমি নাকি এ রাজ্যে নেই, আচ্ছা বলোতো; তুমি কোন রাজ্যে গেছো?
জানালা দিয়ে দেখব তোমায় - বসে থাকি,
কি নোংরা ! কতদিন জানালা গুলো পরিস্কার করেনি কেউ,
পড়ে আছে কত ধুলো, দেখতে কি কালো!
আচ্ছা তোমার কি ওখানে নোংরা ধুলোবালি নেই,
গতবারে একটা চিঠি দিয়েছিলাম - এখনো উত্তরের দেখা নেই।


ও ভুলে গিয়েছি, তোমার সেই লাল জবা গাছে এখন অনেক ফুল,
আর গোলাপের কুঁড়িগুলো সব তুলে ফেলে দেয় - মুনু,
ওতো ছোট কিছু জানে না, ওকে তুমি কিছু বোলোনা,
বাবা আসবে এখুনি - পড়া নেবে, আজ এইখানে শেষ করি,
তুমি ভালো থাকো, ছুটি পেলে এসো, ফুলগুলি দেখে যেও,
ইতি - পাপাই আর মুনু।  আমাদের প্রনাম নিও।


বি:দ্র:  মা, তুমি এসো না একদিন, ওখানে কি কর, খুব কি ব্যস্ত তুমি !