‘ভোরজাগানিয়া গান’ না, কোন মন ভালো করা গানের নাম নয়। এটা, একটা মন ভালো করা  কবিতার নাম। অনন্য কবিতাটার কবি হলেন শ্রাবণী সিংহ।


  পূর্ণ কবিতাটা এত ভালো যে, এটার সম্বন্ধে বলতে গিয়ে কোথা থেকে শুরু করবো ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। প্রতিটা পঙক্তি কবি বুনেছেন মনের সবকটা রং মিশিয়ে।  


  জীবনের পথে অনেকটা চলা হয়ে গেছে “চন্দ্র সূর্য গতি পাল্টেছে অসংখ্যবার, আর এক অগ্রহায়ন।” চলমান নদী চলমানতা হারিয়েছে  স্রোতের অভাবে। “নদীর চর পড়ে।” নদীর মতো  প্রেমহীন জীবনও চলেছে কোনমতে তোমায় ছাড়া। তবু, ভুলতে  পারিনি তোমায়।  “তুমি প্রকৃতই তুমি।” তুমি ছাড়া জীবন রাতের মত ঘন অন্ধকার। সেখানে ভোরের আলো আসে না কখনো। প্রেমহীন রাতে চোখের জলে মাথার বালিশটা ভিজে যায় যখন শুনি “হোয়াটস অ্যাপে ভোরজাগানিয়া গান।”


   যদি এসো আবার, আমি রয়েছি তোমার প্রতীক্ষায়। তবে, “ভুল শুধরাতে এসো না।” এই কথাটা বড় গুরুত্বপূর্ণ। দুটো আলাদা অস্তিত্বের দুটো মানুষ। চিন্তাধারা, রুচি, মর্জি সবেতেই তারা আলাদা। তাই,   একজন যদি  আরেকজনের শুধু ভুল শোধরাতে চায় অনবরত তাহলে, সেই মানুষটার আর স্বতন্ত্রতা  থাকে না।  একশোভাগ ঠিক নয় কেউ, সবার মধ্যেই ভুল আছে, কম আর বেশি। সেই ভুল নিয়েই তাকে যদি ভালোবাসতে না পারি তাহলে চলা আর চলা হয়ে ওঠে না। বয়ে নিয়ে যেতে হয় কোনমতে  নিজেকে। পথটা আর ভালোলাগার পথ হয় না তখন।


“পাকস্থলীর অসুখের” মত ঘ্যানঘ্যানে পুরনো ভালোবাসায় ফিরে যেতে চাই না আমি। নিজের আবেগটাকে নিজের মত করে প্রকাশ করেছিলাম “ভুল যতিচিহ্নে”- ভুল করে। আমার ব্যাকরণের নিয়ম জানা নেই।  তবে, আবেগটা আছে পূর্ণমাত্রায়। তুমি  কবিতাটার সুন্দরতা দেখলে না। শুধু, ভুল ধরলে ব্যাকরণের যতিচিহ্ন  ব্যবহারের। তবুও, তা একটা “কবিতা হয়ে উঠেছিল।” আর এখন, আমি কবিতাও লিখি না। সরিয়ে রেখেছি কবিত্ব আর লেখনীও। তবে, “দুটি লাইনের মাঝে ফাঁক রেখেছি যাতে আলো পড়ে।” এখনো আমি, তোমার পানে চেয়ে থাকার অপেক্ষায় বসে।  শূন্য করে রেখেছি হৃদয়ের  মাঝখানটায় শুধু তোমারই জন্যে - “যদি পারো শূন্যস্থানে বসো দেখি।”


   কবিতাটা পড়তে এত ভালো লাগে যে আমি নিশ্চিত কোনো  পাঠক একবার পড়ে ছাড়তে পারবেন না। শব্দ আর ভাবের মধুরতায়  সম্পূর্ণ রঙিন। অসম্ভব সুন্দর শ্রুতিমধুর ।
  
  কবিকে আন্তরিক শুভকামনা জানাই এমন সুন্দর একটা কবিতা কবিতার আসরে উপহার দেওয়ার জন্য।


ধন্যবাদ।