জীবন বড় অনিশ্চয়। দোলাচলে থাকি সবসময়। কি জানি পারব তো? হবে তো? যা চাই সেটা পাবো তো? আর যদি পাইও তাহলে যা পেলাম, সেটা ঠিক পেলাম তো? সংশয় সারা জীবন তাড়া করে বেড়ায়। স্থির থাকতে দেয় না কোন সময়।  
এমনই এক অস্থির বিষয়কে কবিতায় ধরেছেন আসরের এক প্রতিশ্রুতিবান কবি সরদার আরিফ উদ্দিন।
কবিতার নাম-‘না’ একটি ভয়ংকর শব্দ।
  কবিতার শুরু জীবন শুরুরও আগে। মাতৃগর্ভে সন্তান এসেছে সবে। শুরু হয়ে গেল জল্পনা। সে, ছেলে হয়ে জন্মাবে? না মেয়ে? তার জন্মানোর প্রক্রিয়াতেও সংশয়।বাবা বললেন তাঁর মতো দেখতে নয়। মা বললেন অন্যদের মত মিশুকে নয়। দাদা বললেন বোঝে ভাল তবে, বলতে পারে না। বোনেরা বলে মোটেই চালাক চতুর নয়।পরিবার ছেড়ে বিদ্যালয়ের গণ্ডি। সেখানেও ‘না’ এর সাম্রাজ্য। শিক্ষক বললেন কিচ্ছু হবে  না। অংকে একশোতে একশো পাবে না। তারপরের ক্ষেত্রেও অনিশ্চয়তা – চাকরি জুটবে কি না? যদিও বা চাকরি জুটল ওপরওয়ালাকে তেল না দিলে প্রোমোশন হবে না। এমন করে করে জীবন শেষের দিকে। তবুও,   ‘না’ পিছু ছাড়ে না।
  এবার কবি ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। মুখোমুখি জীবনের-মুখোমুখি একটা প্রশ্নের, যে প্রশ্ন সবসময় ‘না’ বলে এসেছে তাকে একশো আশি ডিগ্রি ঘুরিয়ে দিলেন। ‘না’ কে ‘হ্যাঁ’ করলেন তিনি।নিজ সন্তানের মধ্যে-নতুন   সম্ভাবনার মধ্যে ছড়িয়ে দিলেন নতুন ভাবনাটিকে। আজ থেকে আর ‘না’ নয় এবার শুধু হ্যাঁ, হ্যাঁ আর হ্যাঁ।  আজ না পারতে পারিস কাল পারবি। শুধু নিজ সন্তান নয় এই হ্যাঁ-র আলো ছড়িয়ে দিতে চান সন্তান থেকে সমাজের মধ্যে। আলোকিত হোক পারি না নয়, পারি বলে। ‘না’ থেকে হ্যাঁ তে উত্তরণের সুন্দর এক প্রয়াস। কবির কথায়-“আমার সন্তান ‘না’ দিয়ে বড় হবে না;”  
  একটা  গভীর প্রত্যয়ের কথা-“আজ না পারলে বলি, কাল পারবি।”    
  চমৎকার ভাবনা কবির।একটা নতুন ইচ্ছার প্রকাশ। পাঠককে চিরাচরিত ভাবনার মধ্য দিয়ে নিয়ে  যেতে যেতে হঠাৎ করে নতুন পথের দিশা দেন কবি। পরিবেশন অনবদ্য।  সর্বোপরি, কবিতাটি সুখ পাঠ্য।
কবির জন্য রইলো অভিনন্দন। শুভকামনা আগামীর।
ধন্যবাদ।