কবিতার পাতায় মন্তব্যদান, মন্তব্যের প্রকৃতির গুণগত এবং পরিমাণগত মান নিয়ে চর্চা চলছে ক’দিন  ধরে। বলার অপেক্ষা রাখেনা, যে বিষয়টা অত্যন্ত স্পর্শকাতর।


         নিজের সৃষ্টিতে অনেকে মন্তব্য দেবেন;  সেই চাওয়ার মধ্যে কোন দোষ নেই। বাড়ি থেকে কোথাও বেরোতে গেলে অন্য কাউকে জিজ্ঞাসা করি বা না করি, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে এক ঝলক দেখে নিই যে, লোক সমাজে বেরোনোর মত করে নিজেকে সাজিয়েছি কিনা? কবিতাও তাই। পোষ্ট করার আগে বারবার পড়লে নিজের মধ্যেই একটা বোধ তৈরি হয়ে যাবে, যে সেটা ভালো? না গড়পড়তা? মানে পোষ্ট করার উপযোগী কি না? নিজের যদি ভালো লাগে, তবে  কটা মন্তব্য পড়লো? বা কে মন্তব্য দিলো?  তা নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই বলে আমার বিশ্বাস।


   তবে, নিজের সৃষ্টিতে আমি নিজেই মোটের ওপর খুশি তো!  সেটা একটু ভাবতে হবে যে! নিজের সৃষ্টির ওপর দৃষ্টিটা নিবদ্ধ থাকা সবচেয়ে জরুরী। মন্তব্য নিয়ে নিঃস্পৃহ থাকলেই হল।


    তাহলে, কি দাঁড়ালো? মন্তব্য নিয়ে মাথা ঘামানোর কোনো দরকার নেই? তা কেন হবে? তাহলে তো আমার কবিতা নিজের খাতায় রেখে দিলেই হতো! কবিতা পোষ্ট করে কি লাভ?


    আমার কবিতা কেমন হল সেটা জানার ইচ্ছে তো সহজাত।নিজের সন্তানকে পাড়ার লোকে ভালো বললে মনের মধ্যে  যেমন একটা ভালোলাগা তৈরি হয়, কবিতার ক্ষেত্রে সে কথাটা খাটে বইকি! কবিতার পাতায় এমন বেশ কয়েকজন আছেন, যাঁদের মন্তব্যটাই একটা কবিতার মতো সুন্দর (তাঁদের মন্তব্য  আকারে বড়ো হোক বা ছোটো)।  যাঁদের মন্তব্যে প্রেরণা পাওয়া যায়  আগামীর। কবিতায় তাঁদের মন্তব্য দানের পর নিজের লেখাটাই অন্য রকম হয়ে নিজের কাছেই নতুন ভাবে উন্মোচিত হয়। এত পরিশ্রম সার্থক হয় তাঁদের অমূল্য মন্তব্য  দানে। মনে হয় আরও ভালো লিখে তাঁদেরকে বাধ্য করবো আবার, আমার পাতায় আনতে। একটা অনমনীয় জেদ-আত্মবিশ্বাসে নিজের ভেতরটা ভরে যায়।


     আর, গড়পড়তা মন্তব্য নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই। গড়পড়তা বেশিদিন চলতে পারে না। বন্ধ হয়ে যাবে আপনা থেকেই দুদিন পরে।    


     তাই আসুন সবাই, মন্তব্যে মন না দিয়ে মন দিই কবিতায়।


     শুভকামনা জানিয়ে শেষ করলাম আজকের মতো।
     ধন্যবাদ।