তখনও পূবের আকাশ গাঢ় অন্ধকার!
ঊষার প্রভায় হয়নি ঈষৎ লাল।
আমি ওঁৎ পেতে চেয়ে আছি উর্দ্ধাকাশে
একটি স্ট্রেচার বুলেটের স্ফুলিঙ্গের আশায়!


তখনও মুয়াজ্জিনের কন্ঠে আসেনি ভেসে,
‘ঘুমের চেয়ে নামায উত্তম।’
আমার সহযোদ্ধার হাতে আগ্নেয়াস্ত্র,
তেমনি আমার হাতেও শোভা পায়!


আমার নির্ঘুম চোখ জ্বলছে পতাকার মত;
আমার কোমড়ে বাঁধা সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু
বুলেটের থলি, হাতে সেল্ফ লোডিং রাইফেল!
মাত্র একটি স্ট্রেচার বুলেট ছোঁড়ার অপেক্ষায়!


পৌষের কুয়াশায় বাঁধাপ্রাপ্ত চোখের জ্যোতি;
শিশিরে ভিজে গেছে দেহের বসন,
জড়িয়ে ধরেছে পাদুকার আচ্ছাদন, শুধু আছে
কাঁপুনিহীন শত্রু হণনের দুর্বার স্পৃহা!


হৃদয়ের গভীরে জ্বলে প্রতিশোধের অগ্নি শিখা!
শত্রু কবলিত মাতৃভূমির গভীরে চলে রক্তক্ষরণ;
জ্বলে বারুদের আঘাতে ছায়া ঘেরা গ্রাম!
মুক্তির আকুতি শুনি জননীর শঙ্কিত আননে!


আমি পাগল হয়ে যাই! ভয়শূন্য চিত্ত আমার
বুকের রক্তের বিনিময়ে চায় স্বাধীনতা!
ঘাসের ডগায় ভেসে যায় যাক রক্তের স্রোত,
তবু লাল-সবুজের পতাকাই আমার ব্রত!