শৈশব এর দিনগুলো
অনেক মধুময় ছিল।
স্কুল, পড়াশুনা, খেলা ও
ঘুম ব্যস এইটুকু।
আমার খেলা ও
ছিলো স্কুল বিষয়ক।
সেই স্কুলে আমিই
ছিলাম সর্বেসর্বা।
দিনের বেলায় রাস্তার
পাশের ঐ পিশাচ বাগান;
আর রাতে জানালার পাশ-
আমার বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষ।
আমি বাস্তবের স্কুলে যা দেখতাম,
খেলার স্কুলে হুবহু নকল করতাম।
ব্যক্তিগতজীবনে স্কুলের পেটা
আমাকে খেতে হয় নি কখনো।
কিন্তু দেখেছি রকমারি শাসন।
চুলটানা,মুরগা হওয়া,নীল ডাউন,
লাঠিপেটা আরো কত কি!
কত ছেলেরা জানালা দিয়ে পেটা
খাওয়ার ভয়ে সেই যে পালিয়েছে
আর স্কুলের চৌকাঠ মাড়ায় নি।
বিকালে এই সবই চলতো
আমার খেলার দুনিয়ায়।
তেল মাখানো জালি বেত
বহু কষ্টে সংগ্রহ করেছি।
জানালার রড-ছাত্রের গায়ে
বেত মারলে শব্দ হতো,পিশাচ
গাছ হেলতো দুলতো ভারি
মজা লাগতো আমার।
কেনো পড়া শিখলি না,
কেন?  কেন? হাত পাত,
এই ঠাস্! আজ তোর
হাড্ডি ভাঙবো। আরো
কতো শাসন করেছি
মনের সুখে অথবা ক্ষোভে।
আজ সরকারী বিদ্যালয়ের
আমি পরিণত স্নাতক  শিক্ষিকা।
কঠোর বাস্তবের সম্মুখীন,
শিক্ষা ব্যবস্থা, প্রশাসন সম্পূর্ণ
গেলো পাল্টে। আজ জানালা
দিয়ে পালিয়ে নয়,সম্পূর্ণ
ভয়মুক্ত পরিবেশে,
বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন
সমাপ্ত করে খুশিখুশি
ছাড়বে বিদ্যালয় চত্বর।
পড়া বাড়ীতে নয়, স্কুলেই
নিজের তত্ত্বাবধানে যত্ন
সহকারে শিখাতে হয়।
শাসনতো দূরের কথা
বাড়ী গিয়ে খুঁজে আদরে
নিয়ে  আসতে হচ্ছে।
আমার ছোটবেলার খেলা
আর বর্তমান এর মধ্যে
অনন্ত ব্যবধান। খেলা
খেলাই আর বাস্তব
বাস্তবই।


১২-০৯-২০১৭ ইং ;
২৬ ই ভাদ্র  ;  ১৪২৪ বাং ;
ধর্মনগর ;উত্তর ত্রিপুরা
ভারত।