যে পিপাসু চোখ ছিল আমার খাবারের থালা সাজিয়ে দেয়ার জন্য,
যে কান ছিল আমার যন্ত্রনাগুলিকে শোনার জন্য,
যে পা ছিল আমার চলার আগে পথগুলিকে যাচাই করে নেবার জন্য,
যে নাক ছিল বাতাসকে পরখ করে করে আমার ফুসফুসে শুদ্ধ বাতাসের যোগান দেবার জন্য,
যে হাতগুলি ছিল আমার দীর্ঘ পথের বর্ম,
আমার সম্মানটাই ছিল যার দেহের পোশাক,
সেগুলি আমি নিজেই তালা বন্দী করে রেখেছি,
এত সব নিয়ে যে মানুষ তাকে
কি করে আমার স্বার্থে সাড়া জীবন
আমার লাশের যোগানদার করে রেখে দিতে
পারি কয়টি দিনের জন্য।
আমি পারি নি, পারব না।
হে নতুন-
আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো।
@@@
হে বর্তমান,
তুমি তো সব কিছু জেনেও বহুবার মরন দেখতে পাও নি।
তোমার হাতে বনফুলের আবরন ফেলে
স্বেচ্ছায় পরে নিলে শৃঙ্খলের ধাতব বেড়ী,
নিজ ইচ্ছায় তুমি মিশে যেতে চাও তোমাদেরই মেজাজী দলে,
‘তোর চেয়ে আমার দখল বেশী’ আমার ঘরে চলে
শ্লোগানঃ রেশারেশি, টেক্কা, ঘেঁষাঘেঁষি
দেখি পছন্দের দলেই বেশী মেলামেশি।
জিভেও হারিয়েছ সুস্থ স্বাদ
নকল গন্ধে করেছ নাক রাজপ্রাসাদ।
কুতকাচালি শোনায় তৎপর রয়েছে কান
পা হয়েছে, আগে গেলে হাসিল সিংহভাগ সম্মান।
আশপাশ থেকে বেশী পরিচিত হওয়ার জোশে
পোশাক পাতলা করো সম্মান ঘসে ঘসে
এটাও তো মরন, ঠাণ্ডা ঘরে,
এভাবেই বুনফুল চুপিসারে ঝরে।
ঠিকমতো বাঁধতে পারিনি কোনদিন
পারিনি হতে স্বাভাবিক, তোমাতেই লীন
অযোগ্যই রয়ে গেল বুঝি তোমার সোপান
তুমি আমায় ক্ষমা করে দিও বর্তমান।
@@
হে  অতীত,
কৈশোর শেষে যখন যৌবনের আনাগোনা শুরু
তখন তোমার অস্পষ্ট ছবি রাতে আকাশে হাসনুহানা সুগন্ধি এনে দিত।
অনেক আগেই যেন কাক ডাকার পালা শুরু হয়ে যেত।
মরুভুমিও তখন বন্যায় থৈথৈ
সেই চিকন হাত এখনও অপরিবর্তনীয় হয়ে সামনে স্থির,
এক চুল এগিয়ে আসেও নি, আবার পিছিয়েও যায় নি,
ঠাই স্থির হয়ে বসে এখনও।
তখন সৎ সঞ্চয় কিছু ছিল না,
শরীরের যৌবন বিষ জমতে শুরু করেছিল।
সেটাই হয়ত সবথেকে বিরোধিতা করেছিল।
সবচেয়ে বড় দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
সে কারনে তুমি দূরেই রয়ে গেছ।
তোমাকে খুব কাছে থেকে দেখি নি বলেই হয়ত খুব পরিষ্কার হয়ে আছো,
ভুল ত্রুটি খুব কম খুঁজে পাই।
মায়া জরানো আদর আজ শুনতে চেয়ে মাসে আট  দশবার
তোমার বাড়ির আনাচে কানাচে কানকে চোখকে আবর্জনার পোশাক পরিয়ে রেখে আসি।
যেমন করে এক  পিতৃ-পরিচয়হীন মা সন্তানদের নিয়ে ঘোরাফেরা করে সমাজের ব্যাস্ততায়।
পাশে থাকার তো অনেক সম্পর্ক থাকে
প্রয়োজন সে জন্যই তো ডাকে ।
কবর খোঁড়ার একটু আগে
আশপাশ যদি না জাগে,
তোমরা কোনো একজন এসো
যে কোন সম্পর্ক নিয়ে এক চিলতে ভালবেসো
কারন পাশে থাকার অনেক সম্পর্ক থাকে।