ভুমিকাঃ


এ কাব্যের নাম হলে ‘ইন্দুকে’
ভুরু কোঁচকাতো কিছুটা নিন্দুকে,
তাই সুখবৃক্ষ হয়ে গজালো সে।
তৃপ্তির সুখ আসে না গো নিমেষে।
এ ছিল রাখা সযত্নে, সিন্দুকে ।।


পুরোনো ঝুলকালিকে ঝাড়তে গিয়ে
ফুলকির কণা পরে হঠাৎ ঘিয়ে
সতেজ গাছে পরল আগুন ছেয়ে।
তার-ছেঁড়া বীণা জেগে উঠল ধেয়ে
ফুল পাতা কুঁড়ি গেল সব মাড়িয়ে ।।


ঝরা ফুলগুলি বুকেতে নিয়ে টেনে,
কথা কিছু, কিছু ছন্দটা না জেনে
জড়ো করে করে এই প্রথম বার
স্পর্ধা করছি কাব্যকে আঁকবার,
নিয়মের সব বাধাটুকু না মেনে ।।


ভালো লাগলে মাথায় দিয়ো গো হাত,
উন্মুখ চেয়ে আছি এ দিনরাত,
ভুল থাকলে বলে দিয়ো স্নেহস্বরে,
পাঠক চরণ আমার শির ’পরে
এ উঠোন থেকে কোরো না উৎখাত ।।


ঝড়কে দেখে নিভু নিভু হলে দীপ
যেমন স্বত্বায় চলে ঢিপ ঢিপ
তেমনি চলছে, বুঝিবা সব শেষ,
আর বলা নয়, কোরো না গো দ্বেষ,
নমে তোমায়, এ অধম সন্দীপ ।।
                          
১। অলসেতে মাটি কাটি.........থেমে থেমে পথ হাঁটি


বহু পুরোনো ঝুল-ভরা এক ঘরে
যারা থাকে তারা হৈ চৈ যে কেন করে
স্বাভাবিকতা ছাপিয়ে মুচড়ে উঠে
বাইরের রস ছাড়াও ছিল ফুটে
তাজা ফুল, রাশি রাশি, মন ভিতরে ।।


পাঠক বন্ধু, যে আছো  আজ   কাছে,
কবি না আমি, দোষ ধোরো নাকো পাছে
যা বলার তা বলব প্রলাপ ঘোরে,
প্রণমি তোমায়, যেও না শুনে সরে,
একবার হাত বুলিও সুখ-গাছে।।


আর  দেরি নয়, এসো বলি সে কথা
কিভাবে মনে গজালো সে সুখ-লতা,
সে যেন আজো  বসে সামনে আমার,
যেই ভাবা হাতুড়ি পেটায় কামার,
এসো, চুপচাপ সারি এ কথকতা।।


পাঠকেরা সব বসো ঐ পাশ-সিটে
তাকে নিয়ে বলি দু'চার কথা মিঠে
যেগুলি ভাবলে আজো বাতাস কাঁপে,
নরম আগুন জানান দেয় ভাপে,
কুঁড়ে খায় হৃৎপিণ্ড জ্বালা-কীটে।


দাঁড় বেয়ে  মাঝি নৌকায় দেয় পাড়ি,
চালক ভায়া নিয়ে যায় দূরে গাড়ি
বাতাসে থাকে না মন কাঁপানো গান
নিয়মিত লেখাপড়া, খাওয়া, স্নান,
কোন কাজে দেরী, কোনোটা তাড়াতাড়ি।


দোকান বাজার, রেশন তুলে আনা,
অবসরে খাতায় মারজিন টানা,
এই নিয়ে রাত-দিন কাটত ভালো
সাঁঝে জ্বলত কেরোসিন-ভরা আলো
অভাবও ছিল বেশ কয়েক আনা।


২। বীজের প্রবেশ বাতাসে.........গাছের মাটি প্রশ্বাসে


এক সকালে বেগুনি পোশাক পরে
কাঁধে ব্যাগ নিয়ে দাঁড়ালে এসে দোরে।
হাজার বছর ছোঁয়া না পাওয়া বনে
শুকনো-ভেজা পাতার রাশি গোপনে
পলকে  মাটি-বুক খালি হল সরে।


মরা এলোমেলো পাতারা একে দুয়ে
যারা না জানি কতকাল ছিল শুয়ে
উড়ে আকাশ ফেলল বিষম ঢেকে
আকাশ মাঝে অমর ছবিটা এঁকেঃ
খুঁজি তারে মাথা উঁচু রেখে বা নুয়ে ।


আকাশ মাঝে মৃদু হাসি, মুখ নিচু,
সরে যায় ছবি যত নি তার পিছু
এক পলকে সে দূরে যায় সটান
চোখ নামাই বাঁচাতে নিজের মান,
লেখা থামিয়ে দেখি তার পানে, কিছু।


অতি জোর ঢিপ্‌ঢিপানি চলে বুকে,
শূন্যে ছোটায় অণু-পরমাণুকে,
চোখ থেকে চোখে কি যেন এলো গেল
চুপি সারে বুকে গেঁথে গেল শেলও,
বীজ যেন এক মরমে গেল ঢুকে।


কথা বললে, “আজ আমাদের নাই?”
ভুরু কুচকে, জানতে চাইলে রায়।
বই ভরা ব্যাগ বাম কাঁধেতে ঝোলা
যত্নের চুল বেশ উঁচু করে তোলা।
নোট থামিয়ে স্যার বললেন, -আয়।


বন্ধ করেন মশায় তাঁর বই,
আমরাও লেখা থামিয়ে চুপ রই।
'''আজ তো সোম, তোদের তো নয় আজ,
কাছাকাছি তোর আছে কি কোন কাজ?'''
“হেড স্যারের নিতে হবে দুটো সই।”


-আজ টুয়েল্ভ চলছে,তোদের কাল
লিখে নে, বুধ, সোম; সাতটা, সকাল;
এক কাজ কর, এলি তো খাতা খুল্‌,
চারটি নোট লিখে যাবি ইশ্‌কুল।"
“তাই করি স্যার।” টানলে টুল, লাল।


বসলে আমার দু’ চারটির পরে,
সেথা জুন ক্যালেন্‌ডার পাতা নড়ে ,
ভেতরে আমার আমিও গায়, নাচে,
বাধাহীন নাচ নেচে নেচে সে বাঁচে ,
বাঁধন খুলে গেল স্বর্গীয় বরে।


নোটের নামে কি যে লেখা, কি যে ফাঁকি,
বহু জোড়া চোখ লুকিয়ে চেয়ে থাকি
নাম জানি না, না জানি কি দেশ,
গন্ধে ম-ম বাতাস, এলোমেলো কেশ,
তৃষিত-চোখে ছুঁয়ে ছুঁয়ে নি, কি লাকি!


৩।  এলোমেলো বাতাস......কোথা বয়তে চাস?


ব্যাস্ত থেকে এসে গেছি বহু দূর,
প্রানমাঝে আলোময়, রাত দুপুর
কি যে করি, কোথায় গিয়ে নিই শ্বাস?
না দেখা পেলে প্রাণমন হাঁসফাঁস,
ক্ষণিক দেখা পেলে মেজাজ ফুরফুর।।


কখনো পথে নয়নের লুকোচুরি
দেখা পেতে করি, না কত জারিজুরি,
সে তো বহুবার বাঁচাটাই মরণ
চেনা পথে খোঁড়া হয়ে থাকে চরণ,
জল পেতেই মরুভুমি যাই খুঁড়ি।।


প্রথম-দেখা দিনের সে বীজখানি
আয়েশ আদরে বুকের মাঝে আনি,
প্রাণের শুধা সবটুকু দিয়ে ঢাকি
সকল আঘাত থেকে দূরে রাখি
গড়েছি সুখ-বৃক্ষ, অতটাকি জানি?


তখন মোটেও,  আমিতে নেই আমি
কেন? তা বুঝি জানেন অন্তর্যামী
চিনি কম-বেশি বুঝিনা ক’ চায়ে
চরম রোদেও রোদ লাগে না গায়ে
ছোটাছুটি দোড়াদোরি, ‘কি পাগলামি!’


আগামী 'কিস্তি ২' -এর আকর্ষণ
(৪। দ্বিতীয় দেখা স্কুলে ...... তুমি কিছুটা ছুঁলে)


পাঠকদের সুবিধার্থেঃ
পাঠ করবার আগে মাথায় একটু রাখুন-
Single quotation-নায়কের উক্তি
Double quotation- নায়িকার উক্তি


(বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আগামীতে এই সমস্ত কিস্তিটার PDF Format  এ upload করার ইচ্ছা আছে, সব ঠিকঠাক থাকলে করা সম্ভব হবে, ধন্যবাদ)