বাসটা ধরব বলে দাঁড়ালাম সড়কে মাঝ-দুপুরে
হাল্কা ধাক্কা লাগার কারনে দেখি ডানপাশে ঘুরে।
হ্যান্ডিক্যাপ্ট মত যেন এক  ছেলে বসে রয় গাড়িতে
দুটি টাকা তাকে দেব বলে পকেটে হাত, তারাতারি তে
পকেটের মাঝে হাতটা আমার গিয়ে থেমে যায় নিজে
হ্যান্ডিক্যাপ্ট ছেলেটি দেখি বসে, চুপ করে ঘামে ভিজে
ঝাঁ চকচকে নয় সে দেখতে গাড়ি তৈরি কাঠের ফ্রেমে
নকল দরদ দেখাতে  যারা বিলায় গাড়ি মিথ্যা প্রেমে।
নেতা মন্ত্রী থেকে এসব করে করে ক্লাবের কর্তা যারা
ঘটা করে বিলায় এসব মনে কি রাখে শ্রদ্ধা তারা?
ফাঁকা কলস শুধু প্রচার রঙে যায় কলসখানায়
আরতের সেবা নয়, সমাজে নাম নিজের জানায়
এমন দান নেবে না বলে, গাড়ি আসেনি ভাগ্যে তার
কাঠের ফ্রেম মসৃণ নয় তবু টানে জীবন-ভার
এসব আমি ভাবছি বসে দোকানের বাঁশের খাঁচায়
"পেয়ারা আছে, ভাল পেয়ারা, টাটকা কারো কি চায়?"
ফিরে দেখি সেই ছেলেটি, পোলিও পায়ের, রুগ্ন মুখ,
ব্যবসা করছে আনছে রুজি বাড়িতে তার,ওহ!  কি সুখ
ভিক্ষা যেথা সহজ পথ, নেয় নি সে পথ সত এত
চায়লে ভিক শহর পথে আরামে সে অধিক পেত
সম্মান বোধ এত তীব্র দেখিনি কোনোদিন আগে
সবচেয়ে বেশি শ্রদ্ধা এদের জন্যই মনে জাগে
এগিয়ে গিয়ে কাছে তার বলি,  "দাদা, দিন তো এক কিলো"
ভাল টাটকাগুলো বেছে বেছে সে ক্যারিতে মেপে দিলো
দাম না শুধিয়ে তাকে পঞ্চাশ-নোট একটা দিলাম
তখনি একটু দূরে বাসের শব্দ শুনতে পেলাম
দারুন চাপাচাপি হয় বাসে জানা ছিল আগে থেকে
তারাতারি তাই উঠলাম বাসে টাকা তার কাছে রেখে
পেয়ারার ক্যারি ঝুলছিল বামে, আর ডানে ছাতাখানি
উঠে গেছি বাসে দেখে সে গাড়িতে জুরে দিল টানাটানি
"দাদা, থেমে যান, দাদা,  বারো টাকা আর পাবেন নিয়ে যান"
সেই দোকানীর চিতকারে ড্রাইভার ব্রেকে দেয় টান।
বাস থেমে যায়,চাকাটা গড়িয়ে পোলিও সেলার আসে
আমার হাতে টাকাটা কষ্টে গুঁজে দেয়া হলে সে হাসে
সরল হাসিটা মাখানো মুখেতে,সে পিছায় তার গাড়ি
মনে মনে তাকে হাজার সেলাম করে ফিরে আসি বাড়ি
একটা কামড় দিয়ে পেয়ারায় তার মুখ ভাসে মনে
'সবল ভিখারি ' স্বেচ্ছায় কেন তবে নামে ভিক-রণে?
সম্মানবোধ আছে যার দেহে ভিক্ষা করে না তারা
যাদের তা নেই তারা অনায়াসে এইপথে দেয় সাড়া
হাজার স্যালুট দিচ্ছি তোমায় সৎ পেয়ারাওয়ালা,
অটুট থাকুক আজীবন ওই সৎ বিবেকের মালা।