আধুনিক কালে ছেলের উপর মায়ের থাকে না জোর,
ভুলে যেতে হয় তাদের অসুখে জেগেছে মা রাত-ভোর।
কষ্টগুলোকে নিজের জন্য, যে মা ভাল খাওয়াল
সে মায়ের শেষ দিনে ছেলেগুলো কেন আঁধার ঘনালো?
ঠিক হল ' মাকে তেতলার ঘরে রাখা হবে থেকে আজ'
সেই অনুযায়ী উপর তলায় আনা হল গৃহ-সাজ।
করা হল একা সংসার থেকে, বলার ছিল না কিছু
জ্ঞান না-হওয়া ছোট নাতিনিটা আসছিল মোর পিছু
ধরা হল তাকে সকলের মাঝে, দেখল হাজির সব
বুঝলাম মনে, আমি চলে গেলে ফুটবে সবার রব।
ক'দিনেই সব ঠিকঠাক হল আগের 'মতি ভবন'
শুধু আমি বাদ সে বাতাস নিতে যা ভেজায় শুখা-মন।
ছেলে বউ নাতি-নাতিনীকে আর বাড়ির সবাই মিলে
থাকতে চেয়েছি একসাথে সব, বিধি কি দিনটা দিলে?
এ যুগের সব রকমসকম আমাদের বোঝা দায়
ব্যাকরণ মোর বড্ড সেকেলে, কাকে তা বোঝান যায়!
সকাল, দুপুর, বিকেল সন্ধ্যা পুরোনো স্মৃতিরা আসে
চোখ বুজে দেখি: টিনের চালায় চার ছেলেমেয়ে হাসে।
গরীব খানায় বিছান মাদুরে কর্তা নমাজ পরে
ঘটি-বাটি নিয়ে চার অবতার দাপিয়ে বেড়ায় ঘরে।
সুর কেটে যায় স্মৃতি-পর্দায় রহিমা খাবার খুলে
'উঠো, খাও নানী' বলে হাতখানা কয়েকটাবার ছুঁলে।
বলবার মত আরো কত কথা জমানো রয়েছে তলে
সে তো কথা নয়, ব্যাথার কুঠার, আঘাতে এ মন জ্বলে।
এখন একটা উপায় খুঁজেছি, কিছুটা বাতাস পেতে
অসুখ বিসুখ হলে কিছুদিন লোকজন উঠে মেতে।
উপরে অনেক চেনা লোক আসে জানতে ' কেমন আছি?'
এ সুযোগে পাই ছেলে বউ  নাতি-নাতিনীকে কাছাকাছি।
প্রতিদিন হোক এমন অসুখ আমার শরীর ঘিরে
একা থাকলেও যে ক'দিন আছি জীবন তো পাব ফিরে!!!
                                              ♦♦^^^^সমাপ্ত^^^^♦♦