কত ব্যাথা বুকে নিয়ে
কাজ করে যায়,
গ্লাস বাটি ভাঙা গেলে
বকাঝকা খায়।
মাস-মাইনের টাকা
পায় না সে হাতে,
কথামত জমা হয়
একাউন্ট খাতে।
বিয়ের যোগার হলে
বাড়িতে তা যাবে,
এ নিয়মে বাঁধা মেয়ে
বাপের 'অভাবে'।
কি তার জীবন গাথা
জন্মটা মা'র,
ঝি-গিরি করলে চলে,
প্রতি শ্বাস তার।
ক'টা দিন মা'য়ে পাবে
মেয়েগুলো কাছে,
নাড়াচাড়া করে গ'ড়ে
জীবনের ধাঁচে।
ব্যামো হলে নিজে খুঁজে
ডাক্তার বাড়ি,
আরো বড় হলে দেয়
মা'র দেশে পাড়ি।
যে ফল সবল দেহে
অমৃতের বাড়া,
ব্যামো-জিভে সেই ফল
দেয় নাকো সাড়া।
এহেন আদর মা'র
তদ্রূপ ফল,
স্নেহ-ধারা স্বাদু নয়
দেহ যে বিকল!
***
আহা বাছা! কি করুন
ব্যাথা-সহা মুখ,
তাকে ভেবে ঘরে বসে
ভারি লাগে বুক।
কিছু যদি করা যায়
তার লাগি ভাল,
যাতে কিছু আলো পায়
তার ভাবিকালও
পাড়লাম কথা তাকে,
"দিদিটার সাথে;
বই আমি এনে দেব,
আনবি তা হাতে।
সামলে রাখিস কাজ
যতটা পারিস,
যেদিন আসব আমি
চা-লেটে আনিস।
শুরু হল 'লেখাপড়া'
বাড়ির আড়ালে,
শুধু জানে ছাত্রী ও
ঘরের বিড়ালে।
বিধাতার ছকে কিছু
গোপন না থাকে,
মনিব ঢুকল ঘরে
পড়ানোর ফাঁকে।
দরকার সেড়ে নিয়ে
চলে গেল সাব',
দিন দশ পরে এল
এটার জবাব।
কাপ হাতে মালকিন
বলল আমাকে,
"কেমন তুমি তো জানো
তোমার দাদাকে,
আমার মেয়েকে শুধু,
পড়াতে এসেছ,
সাথে আর কেউ কেন
পড়াতে নিয়েছ?
মাস্টার পুষছি তো
টাকা দিয়ে মোরা,
কেন তুমি আর নাও
অনুমতি ছাড়া?"
আমি তো টাকার লাগি
পড়াই নি তাকে,
জ্ঞান চোখ দিতে গেছি
পড়ানোর সাথে।
একটু বাংলা যদি
পড়তে সে পাড়ে,
অনেক দুখের বোঝা
চাপবে না ঘাড়ে।
কিছুই তো নেই তার
'খাটো আর খাও।'
                 (চলবে)