জন্মাবধি তুমি মোর শিরোপরে রহি,
                উদ্ধারিলে অধমেরে শত কষ্ট সহি।
রোদ-বৃষ্টি-ঝড়-জল সকলি সহিলে,
                বাঁচাইয়া ব্রহ্মদেশ আপনি দহিলে।
যুবাকালে কেশদাম দুলাইয়া গরবে,
               ভেবেছি চিরটিকাল এমনই রহিবে।
সহসা কে যেন উঠি কহিল মনেতে,
              “সকলই ক্ষয়িষ্ণু হে, এ পোড়া মহীতে”।
দেখিতে দেখিতে কত কেশপুচ্ছদল,
               দিবারাত্রি ঝরে গেল শুধু অবিরল।
একদা যেখানে ছিল পুঞ্জ পুঞ্জ কেশ,
               শূণ্য হইয়া মোরে করিল নিঃশেষ।
তেল-জল-ঔষধি করিয়া সেবন,
               রুধিতে পারিনি তবু তাহার পতন।
নিরুপায় হয়ে তাই স্মরিনু বান্ধবে,
                প্রতিকার কিছু যদি মিলে যায় তবে।
বন্ধুবর জিজ্ঞাসিল, “নেবে পরচুলা?”,
                শরমে-শঙ্কায় মনে হোল বড় জ্বালা।
বন্ধু বলে, “এ জগতে পর কেহ নয়,
               পর চুলে ক্ষতি নাই নাহি কোন ভয়”।
এমনটি হবে কভু ভাবিনি মনেতে,
               কি উপায় পারে তারে ধরিয়া রাখিতে।
নিয়ত যাচনা মোর শিরে রহ আজ,
               তব মূলে দণ্ডবৎ হে কেশরাজ।