কাল হাস্নাহেনা আর রজনীগন্ধারা কাড়েনি ঘুম
সারারাত কেটেছে শুধু তোমার চুলের মদিরায় বুঁদ হয়ে,
রেশম কালো ঢেউয়ের গভীরে কখনো ভেসেছি সাঁতারে,
কখনোবা ডুবেছি ইচ্ছে করেই, আরো প্রগাঢ় কোন গন্ধখনির লোভে।
আলতো ছোঁয়ায় আঙুলেরা কেটেছিল বিলি তোমার নরম দেহপাশে,
বিন্দু বিন্দু স্পর্শ নিয়েছে প্রাণপূর্ণ তৃপ্তি, যেমন
জৈষ্ঠ্যের কাঠফাটা দুপুর আঁজলে নেয় মেঘেদের আশীর্বাদ।
দু’হাতের দৃঢ়তায় অনুভূত ছিল তোমার পেলবতা
গোলাপের মোলায়েম পাপড়ি আর, প্রজাপতির তুলতুলে ডানা
কিংবা পাখির পালকের উপমারা, হারিয়েছিল তাদের চিরন্তন ভূমিকা ।
স্নিগ্ধতার সফেদ চাদরে ছিল ঢাকা আমাদের যত নিবিড়তা,
হয়তো পাওনি টের, ক্লান্তির অতলে হারিয়ে যেতে যেতে,
নিজেরই অজান্তে কখন ধরেছিলে টেনে তারই কোণাটুকু।
ঠোঁটের শপথে সহসা করেছি আশ্বস্ত, হারাতে দেবনা তোমায় কখনো আর ।

আঁধারের আচ্ছাদনের কাছে ছিল একান্ত যাচনা,
হও আরো গাঢ়, কোন আলো যেন ভাঙতে না পারে এই ব্যুহ ।
নিগূঢ় আবেশে জড়ানো কালের কাছে ছিল প্রার্থনা, হও তুমি অন্তহীন,
যদিও জেনেছিল প্রাণ, সময়ের পরিক্রমা অচিরেই হানবে তার করাল আঘাত ।
ফিকে হওয়া রাত আনবে আরেক স্বপ্নভাঙা হতচ্ছাড়া ভোর
দিগন্তের প্রথম রশ্মি ফুঁকবে তার শিঙ্গা,
দেবে জানান নতুন দিনের যুদ্ধ শুরুর প্রস্তুতির ।
চেতনায় ভাসে আবছায়া –
আগত দিনের বেহিসাবী ছুটেচলা, আর যত নিরর্থ যাপন।
হৃৎপিণ্ড জুড়ে হাহাকার, কিসের নিগড়ে বাঁধি আমাদের এই  কাল।