কি অদ্ভুত
বার বার দেখা হয়ে যায় জীবনের সাথে;
খুব চেষ্টা করি, যেন দেখা না হয়
অনেক প্রশ্ন করে, এত প্রশ্নের উত্তর জানা নেই আমার,
তারপরও দেখা হয়ে যায়, অসময়ে, দুঃসময়ে, বার বার
না দেখার ভান করি, পেছন থেকে আঁকড়ে ধরে ।
আমি নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে পারি না
অক্টোপাসের মত জড়িয়ে রাখে, আমার নিঃশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হয় ।


প্রথমবার দেখা হয়েছিল ওর সাথে, অনেক আগে
প্রায় ৩০ বছর হবে ;
তখন আমি এতটা পরিপক্ক ছিলাম না
একা একা হাঁটতাম
অনেক বড় বড় স্বপ্ন দেখতাম; বদলে দেয়ার স্বপ্ন
অবান্তর ভাবনাগুলো আঁকড়ে রাখতো আমায়।
অনেক উপদেশ দিত, সবার জন্য সব কিছু নয়
ডেল কার্নেগী, বানী চিরন্তনী, পাওয়ার অব পজিটিভ থিংকিং……
এসব বই পড়িস না, মারা পড়বি, বই পড়ে কিছু হয় না,
বাস্তবতা থেকেই অনেক কিছু শেখা যায়, বইয়ের দরকার হয় না ।


তারপর থেকে, ক্রমাগতই দেখা হতে থাকে
জীবনের সাথে;
অভিজ্ঞতার আলোকে প্রায়ই বলতো;
মানুষের জীবনে প্রেম খুব দরকার কিন্তু খুব ভয়ংকর বিষয়
ঠিক মত হ্যান্দেল করতে না পারলে, সব পুড়ে ছারকার করে দেয়;
খুব অবাক হয়ে শুনতাম, সব কথা বিশ্বাস করতাম না কিন্তু  মন দিয়ে শুনতাম।
জীবনে সফলতাই বড় কথা
কে কিভাবে হল, সেটা  গুরুত্বপূর্ণ নয়।
কে কাকে ল্যাং মারলো, তেলবাজী করলো,
কিভাবে ডিগবাজি দিল, কে কার প্রিয় অপ্রিয়… এসব ভাবতে নেই;
নীতি, আদর্শ এসব দেখার কেউ নেই, মূল্যও নেই।


মাঝখানে অনেকদিন দেখা হয়নি
গত ১০ বছর ধরে আবার প্রতিনিয়তই দেখা হচ্ছে;
ততদিনে আমি প্রফেশনাল জীবনের অনেকটাই পেরিয়ে গেছি
জীবনের কথা গুলো, বার বার মিলিয়ে দেখছি;
এখানে সম্পর্কগুলো খুবই মেকী
স্বার্থের আবরণে ঢাকা, প্রয়োজনে কৌশলী ছুরি মারা
তেলের নৌকায় চড়ে গন্তব্যে পৌছা,
ইনিয়ে বিনিয়ে জেন্ডার বেনিফিট আদায় করা
মনুষ্যত্ব বিসর্জনে ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স ভারী করা.........
এতসব মন দিয়ে শুনে কোন লাভ হয়নি,
সারাজীবন তো উল্টো স্রোতেই চলেছি !!!


গত ৬ মাস ধরে,
প্রতিদিনই দেখা হচ্ছে; সন্ধ্যায় আড্ডা হচ্ছে
মানবিক কাজের জরুরী সহাহয়তায় ব্যস্ত সময়
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে;
একই চিত্র, দেখে দেখে অভ্যস্ত
নুতন কোন আর উপদেশ দেয় না জীবন।
দুই তৃতীয়াংশ শেষে, আর কিছুই কাজে লাগে না
অনুকূল স্রোতে ফিরে যাবার উপায় থাকে না
কেবল অভিজ্ঞতাগুলো পরের প্রজন্মে ছড়িয়ে দেয়ার ইচ্ছে মরে না ।


মে ১২, ২০১৮
কক্সবাজার