সময়ের পেন্ডুলামে দাঁড়িয়ে দোদুল্যমান আমি_
সেই চিরচেনা শাহবাগ,ঝিগাতলা,জাহাজবাড়ি হয়ে
পা দুটো স্থির পাতাম রেস্তোরাঁয়!!
সময়ের ফাঁক গলে ছুটি নিয়েছে যে সুদিন
লেকের স্বচ্ছ পানি ফিরিয়ে নিয়ে যায়
সেই সব দিনে।
একদিনের কথা,
তুমি তখন ঠিক ঠাক শাড়ি সামলাতে শিখোনি।
আহসান মঞ্জিল হয়ে যখন ফিরছিলাম_
হঠাৎ ঝুম বৃষ্টি।
তোমার বায়না মেটাতে হুট খুলতেই
১০২ ডিগ্রির শরীর টা ভিজিয়ে নিল
শহরের প্রথম বৃষ্টি।
মুহুর্তেই শরীরের সমস্ত তাপমাত্রা কেড়ে নিলো
তোমার নীলাভ আঁখি,
কি দেখছো?
তোমার প্রশ্নে উত্তর ছিল
নীলাভ দুটি আঁখি।।
রিক্সার ভাড়া বাঁচিয়ে রথ গাড়িতে চড়া সন্ধ্যা গুলোতে আমাদের নাস্তা ছিল এক কাপ গরম চা।
একবার তোমার বায়না ছিল
শাড়ি পাঞ্জাবি পরে ঘুরতে বের হবে।
আমার পরনে ছিল তোমার দেয়া পাঞ্জাবী
আর তোমার পড়নে
তোমার দাদির তুলে রাখা যত্নের শাড়ি।
বিপত্তি বাধলো অন্যথায়_
তোমার ছিল মুহুর্তকে ফ্রেম বন্দী করে রাখার তাড়া
আর আমি চেয়েছি শুধু সময়টাকে
মনবন্দী করে রাখতে।
বিশ টাকার চানাচুর কিনার চুক্তিতে
যেই ঝালমুড়ি ওয়ালা মামা আমাদের যুগল ছবি তুলেছিল_
সেদিন প্রথম শিখেছিলাম যুগল ছবি কিভাবে তুলতে হয়।
এখন আমি সিনেমা বানাই_
এর ওর তার গল্পটাকে ২৪ এম এম এর পর্দায় দেখাই।
অথচ নিজের জীবনের গল্পটাই রেখে এসেছিলাম
দিয়া বাড়ির সেই ভাংগা চোড়া মোবাইলের ফ্রেমে।
সময়ের পেন্ডুলামে আজ আবার দাঁড়িয়ে_
পৃথিবী কি অদ্ভুত তাই না বলো-
যেই তুমি শাড়ির আঁচল ঠিক করতে পারতে না
সেই তুমি এখন দিব্বি শাড়ির আঁচলের সাথে সাথে
অন্য কারো হাতটা ও সামলে রাখো যতনে।
যেই তুমি আমাকে ছাড়া বেঁচে থাকাটাকে কঠিন ভেবেছিলে,
সেই তুমিই এখন দিব্বি ভাল থাকো অন্য হাতটি ধরে।
মনে পড়ে একবার টপ টপ করে ঝড়ছিল আমার
শ্বেত রক্ত কনিকা,
গলির মোড়ের _
জামাল ভাইয়ের দোকানের ৩ টাকা দামের শার্প ব্লেডের আঁচড়ে।।
বাসায় ফেরা পর বোনের প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছি।
কোন উত্তর পাইনি।
সেদিন প্রথম বুঝেছি,
আমার আপন ব্যাথা নেই বলে তাই
তোমার ব্যাথায় পুড়ি!!
পৃথিবীটা সত্যিই এক রংগমঞ্চ,
আজ এক শহরেই দুজন ঘুমাই
এক আকাশের নিচে
অথচ একই আকাশ দুজন দেখি
দুই জানালা খুঁলে!!
সময়ের পেন্ডুলামে দাঁড়িয়ে দোদুল্যমান আমি
তুমি থেকে যাও
শতাব্দীর প্রাচীন শ্যাওলা হয়ে!!