বাংলাদেশ! আমার স্বাধীন স্বদেশ, দেশমাতৃকা!
তুমি ছাপান্নো হাজার বর্গমাইল জুড়ে উদ্ধত শির
এক লাল সবুজের পতাকা। তুমি সাতচল্লিশ, বায়ান্ন,
ঊনোসত্তোর, একাত্তরের স্মৃতি রক্তশিরায় মস্তিস্কে উত্তেজনা টানটান।
তুমি ইয়াহিয়া, ভুট্টো, নিয়াজী, ফরমান আলী,
মুবাশ্বিরের মতো হায়েনার চক্রান্তে দংশিত লুন্ঠিত।
তুমি শত বাধা পেরিয়ে মাথা তুলে দাঁড়ানো
পৃথিবীর বুকে বিস্মিত যুব-প্রাণ। তোমার রূপে
জীবনানন্দের রূপসী বাংলা, অবারিত সোনালী ধানক্ষেত।
তোমার বাংলার মাটি বাংলার জল রবি ঠাকুরের
গীতবিতান। তোমার ভাষার টানে অতুলপ্রসাদের গানে-
মোদের গরব মোদের আশা, আ’মরি বাংলাভাষা।
তোমার স্তন্যপানে জাগ্রত স্বাবলম্বনের কামনা,
জন্মধন্যতাবোধ। তুমি মাতৃভাষাপ্রীতি। তুমি -
গাফফার চৌধুরীর কলমে আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো
একুশে ফেব্রুয়ারী, সুরে শহীদ আলতাফ মাহমুদ।
তুমি চর্যাগীতি থেকে শাক্তগীতি, তুমি রামপ্রসাদী,
তুমি সারাবেলা অনুষ্ঠান উদিচি, ক্রান্তি, ছায়ানটের।
তুমি ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি। হৃদয় নিংড়ানো লালন।
তুমি হাসন রাজা, দুরবিন শাহ, শাহ আব্দুল করিমের মরমী সংগীত।
তুমি কবিতা, তুমি কবি নির্মলেন্দু, শঙ্খ ঘোষ, শহীদ কাদরী
শামসুর রাহমান। তুমি প্রীতিলতা, বেগম রোকেয়া, তুমি সূর্য সেন  
তুমি দ্বিজেন্দ্রলালের বঙ্গ আমার জননী আমার।
তুমি বাংলাদেশ। তুমি আমার বাংলাদেশ।