কোন ক্ষত চিহ্নের কথা বলছিস! বল?
দৃশ্যমান অদৃশ্যমান ক্ষত নিয়ে,শূন্যস্থান নিয়ে
আর কত ক্ষত চিহ্ন আঁকবো...
ক্ষত-বিক্ষত ব্যর্থতার ঘামে
জীবন এখন আগুন
কষ্টময়কালো নোংরা প্রভাতের
কালো দাগে আমি নিজেই
পুড়ে পুড়ে এক বিশাল ক্ষত চিহ্ন!


কোন মহাকাব্য লিখতে বলিস!
আমি কবি নই; কাব্য নির্মাতা!
কবিতারাও এখন বাতাসে ওড়ে  
প্রলাপের মত স্পন্দনহীন শিল্পহীন প্রতিভা!
মহাকাব্য! সেতো আমারই অধরের অর্ধস্ফুট উচ্চারণ!
আমার ওষ্ঠের একমাত্র জারজ সন্তান!
ভালোবাসার চিহ্ন নিয়ে
লীলাময়ী করপুটে ওড়া
প্রকৃত সারস!


‘কোথায়,কোথায় তুমি
শোনো তবে স্বর
শোনো এবং অবহিত হও
কালো বিম্বাধরের
প্রতিটি শব্দই আমি শিখেছি
প্রতিটি শব্দকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে
আমার  কাব্যের কারবার!
আমার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি,
নিয়তির ভিতরে মননের জ্বলন
বিষবৃক্ষ,কাব্য ও যন্ত্রনা মিশে একাকার!
ত্রিকালের স্বপ্নচোষা অতৃপ্ত পায়স
মদের টেবিলে উল্টাপাল্টা আকাশে
উড্ডীন বায়স
অলক্ষে অগোচরে তাদের ধ্বংসের জন্য
অবিনশ্বর সব ভূখন্ডে হেঁটে গেছি
বৃষ্টিকে বাউলি কেটে দৃষ্টিগম্য অন্ধকারে
অতিরিক্ত একটি ঘাসকষ্ট ঠোঁটে
আমি আবৃত্তি করি আকাশ
রক্তের দরবারে!


নারী—এক অদ্ভুত নগরী
জানালাজটিল ঘুলঘুলিবাক্য
পাহাড়ের ছায়া মেপে তারা
নিজেরই ছায়ার উচ্চতা পায়নি
দীর্ঘকাল পরে পুনরায় পাঠের সময়
দ্যাখো, ইতস্তত অসুস্থ বৃক্ষেরা
পল্লবিত ব্যাপ্ত বনস্থলীর ক্লান্তশ্বাসে
উদগ্র উষ্ণ মাংসমেদ তার শাদা পালকে!
মহাকাব্যের কথা কেন ভাবো  
নিজেই নিজের ভাষায় খুঁজে পাইনি
আমার নিজেরই নিয়তি
মেঘের সংঘর্ষ, সংস্থান অপেক্ষা
সংশয়াপন্ন অস্তিত্বের প্রাণ ও প্রজ্ঞা
জীবনসন্ধ্যার স্বর
ঘা দিয়ে যতই শেখাক প্রাজ্ঞবচন
সংরচনে মহাকাব্য
স্বেচ্ছাচারী বেভুলবন্দী বাতাস
পোড়া মাটির জোড়া হাঁস!
অবিরাম রক্তক্ষরন!


দাও কান, কথায় আমার!
মুকুরে প্রতিফলিত সূর্যালোক
কি আদৌ সক্ষম
চিরস্থায়ী হাসি গ্রহণে?
অখচ হৃদয় উন্মাদ হয়,
আশ্রয়-সন্ধানে- মাংসে
সুস্থ মৃত্তিকার চেয়ে সমুদ্র বিপদসংকুল  
তারো বেশি বিপদে
সঞ্চারিত অভিলাষ
একরাশ কালো মেঘ
নীলিমায় প্রক্ষালিত বিভিন্ন আকাশ!


আমি অনেক ছোট একটা মানুষ!
আদি যুগের থেকে শুরু করে আজ অবধি
সমস্ত কাব্যগ্রন্থ উল্টে পাল্টে
কবিতা বুঝিনি আমি!
তোর জন্য একটা কথাও
কোথাও কেউ লেখেনি
আমার কাব্য যত
আর কত ক্ষত হলে দিন-রাত স্থির হবে?
তিমির পথে বাঁধনে বাঁধবে বাঁধন?
পায়ে পায়ে সময়ের সাদা রথ
ফেলে যায় সুরভিত ক্ষত আর বিক্ষত
নধর জলের নিচে আপক্ক রক্তিম জখম
মদিরার বুদ্বুদে ডুবে গ্রন্থ ছন্দোবদ্ধ হলে
দেখাবো তোকে,  চিহ্ন নিয়ে মানুষ
বাঁচে কি রকম...
- স্বপ্নময় স্বপন©