তারিখ ঃ – ২২/০৬/২০২২ ইং , সময় ঃ বিকাল – ৫-৩০ মিনিট ।
আমার কৃষক পিতা
বাবা ছিলেন জাত কৃষক
চাষাবাদ নিয়েই থাকতেন ব্যস্ত
মৌসুমে মৌসুমে ফলাতেন নানা ফসল
দিনরাত কাটাতেন ক্ষেতে মাঠে
উঠতেন খুব ভোরে
ফজরের নামাজ সেরে , গোয়ালের গরু বের করে
লেগে যেতেন কৃষি কাজে ।
ঘরে উঠত এক এক মৌসুমে
এক এক রকম ফসল
নিত্য নতুন শস্য দেখে
ভরে যেত হৃদয়-মন
কাঁচা পাকা ফসলের অন্য রকম গন্ধ
বড়ই মধুর , অতি যাদুর
হৃদে আনন্দ ধরে প্রচুর !
গোয়ালে শোভা পেত গরু
ছাগলের ঘরে ছাগল
হাঁস-মুরগি পালা হত সারা বছর
পুকুর ভর্তি মাছ , পানার উপর খেলত পাখি
পাড়ে ছিল শাক-সবজি ও হরেক রকম গাছ
মাছ , মাংস , দুধ , ডিমের হতো না অভাব
এ সবে চলতো মেহমানের সাথে ভাব ।
বাবার সাথে ছিল –
বাহ্যজগতের নিবিড় সম্পর্ক
আসমান দেখে দিতে পারতেন বলে
কখন মেঘ-বৃষ্টি , কখন হবে রোদ
ফসল কবে পাকবে , কখন কাটবে
কোন মৌসুমে কেমন ফলবে ফসল
সবই ছিল নখ দর্পনে , কোনটা আসল !
বাবা খালি পায়ে হাঁটত
সবুজ ঘাস , ক্ষেত ও গাছপালা নিয়ে করত কাজ
গরু-ছাগল , হাঁস-মুরগির সাথে ছিল ভাব
নিজ হাতে তুলতো ফসল , বুনত ফসল
খাল , ছড়ার নীরে সারত চাষাবাদ
হাট থেকে দু’হাতে আনতো সদাই
সব মিলিয়ে তিনি হয়ে উঠেন নিসর্গের মিতা ই ।
এসব এখন জড়া জীর্ণ অতীত স্মৃতি
চলছে তাল-বেতালে আধুনিকায়নের গীতি
সাথে নগরায়নের বল্গাহীন প্রীতি
পিতার চির বিদায়ের সাথে তাঁর ঐতিহ্যের বিলীন
ক্ষেত-পাথর , কৃষি , পশু-পাখির লালন পালন
গাঁ , মাটি ও প্রভুর সৃষ্টির প্রতি চির বন্ধন
প্রকৃতির অকৃত্রিম সম্পর্ক হয়েছে ধূলায় মলিন ।।
শরীফ নাবাব হোসেন ।