অরিন্দম জানতো ...
কখনও দুটি জীবন আবার হাসবে
অসংলগ্ন কোনো এক ক্ষণে  ...
অসামাজিক, অনৈতিক, অবিন্যস্ত কোনো
দৃষ্টি বিনিময়ে।


হয় তো কোনো এক মেঘ-রোদ দিনে
পরাজয়ের ক্লান্তিমাখা শরীরে ফুটপাথে দাঁড়িয়ে
আধময়লা কাঁচের কাপে চায়ের চুমুকে চকিত দেখায় মনে হবে,
সিগনালে আটকা রূপালী গাড়িটার পেছনের সীটে বসা মধ্যবয়সী নারীর
নহলী যৌবনের সন্জীবনী সুধা মেখে
আপ্লাবনে, আস্বাদনে, আরাধনে
কখনও হেসেছিলো দুটি জীবন।


ধানিরঙা শাড়ি, মিনা করা ঝোলানো দুল, সবুজ পাথর বসানো হার,
এসি গাড়ির বদ্ধ জানালার আড়ালে
বয়স লুকানো লালচে চুলে  
আনমনে বিলি কাটবে তার হাত ...
কখনও যেই হাতের নরম, নধর, নবনী স্পর্শে
হেসেছিলো দুটি জীবন।


প্রাডা ফ্রেমের চশমায় ঢাকা মায়াময়ী অবহেলিত চোখে
হাস্যজ্জ্বল জীবনকে ফেলে চলে যাওয়ার প্রচ্ছন্ন বিষাদ,
হাজার দফা নজরদারীতেও নথিভুক্ত নর যা পড়তে পারেনি  ...
অথচ কখনও সেই চোখে চোখ রেখে
অনিশ্চিতে, অকিন্চিতে, অবিমৃষ্যে
হেসেছিলো দুটি জীবন।


ঠিক তক্ষুণি রোদের সাথে খেলায় জিতবে মেঘ  ...
নামবে নাগরিক দূষণের অসিত বৃষ্টি,
পি পি পো পো শব্দে বাজতে থাকবে রাস্তা ভর্তি গাড়ির হর্ণ,
জ্যামটা হবে আরো জটিল।


নথিভুক্ত নরের বিরক্তি উপেক্ষা করে সে গাড়ির জানালা খুলবে  ...
হাত মেলবে বৃষ্টির দিকে,
অম্ল বৃষ্টির ছাঁট তার ত্বকের স্পর্শে হাসবে
শ্রাবণের নব ধারা হয়ে ...
যেমন কখনও কোনো একুশে বর্ষায় সিক্ত আঁচল লেপ্টে
তার সুডৌল বক্ষে নিশ্বাসের লয়ে
কাঁপনে, কাঁদনে, কাড়নে  
হেসেছিলো দুটি জীবন।


একুশ দহনের নির্জলা বর্ষার অরি পোষা দুঃখ নিয়ে
অরিন্দম জানতো ....
কখনও সেই দুটি জীবন আবার হাসবে
সর্বনাশা কোনো এক বারিদে ভেজা নাগরিক সড়কে  ...
নিখর্ব অভিমানে, নিখাদ বিষাদে, নিঁখুত আকর্ষণে আটক
নিবদ্ধ, নিবিষ্ট, নিভৃত কোনো
দৃষ্টি বিনিময়ে।