হয় তো কোনোদিন কর্কট ক্রান্তিতে  
পরিশ্রান্ত হবে হৃদয়ের শ্রাবণ,
মন আকাশে জমাট মেঘমালা নিয়েও
অবিরাম রৌদ্রব্যাধিতে পুড়বে অন্তরের জমিন ...
আর অনাবৃষ্টির অন্তহীন খেদ নিয়ে কাটবে
তোমার আমার প্রিয় ভালোবাসার বর্ষা।


তুমি ... আমি ...
মধ্যবয়সী জোড়াচোখে হৃত যৌবনের অবসাদ মেখে
বিফল প্রেমের গুমোট কান্না এঁকে
শত ফাটলে ছিন্নভিন্ন মনের দৃষ্টি মেলে ধরবো
যত্নে লুকোনো স্মৃতির অ্যালবামে।


হয় তো বন্ধ চোখের স্বপ্ন তখন আর স্পষ্ট নয়,
খোলা চোখ ধাঁধাবে কক্ষপথে এগিয়ে আসা
রীতিনীতি আর নৈতিকতার সূর্য ...
ভূত-ভাবীর মোহনায় আমরা থাকবো সামাজিক নিয়মে
অপরিচিত, অস্বীকৃত, বা অবিদিত হয়ে।


হয় তো তারপরও জীবন কাটবে এভাবেই ...
আমরা যে যার আরোপিত শেকলে আটকে
অভ্যস্ত, ধাতস্থ আর চর্চিত হবো প্রথার দহনে।
সাংসারিক সুখ-দুঃখে আপ্লুত হবো ...
সূত্রসিদ্ধ মাপা হাসি-কান্নায় সাজাবো চারপাশ,
আশীর্বাদ দেবো সন্তানদের ...
আর মর্তসঙ্গীর দেহাবসানে ফেলবো
একজনমের বিচ্ছেদ অভিশাপে প্রগাঢ় অভিমানে জমানো
চোখের জল।


এরপর শ্বসনের ঋণে জর্জরিত হয়ে
সন্তানদের অবহেলা সূদেমূলে শুষে
নির্বাসিত হবো ওল্ড হোমে ...
হলদে চাদরের স্যাঁতসেতে বিছানায় পূতিগন্ধে ডুবে
অশীতিপর, কুঁচকানো, অথচ লোভী শরীর নিয়ে
তুমি আমি পড়ে থাকবো দুই দেশে ... অকৃপণ উপেক্ষায়।


চোখ বুঁজে স্বপ্ন দেখার সাধে জুটবে মরণভয়,
আর খোলা চোখে জমবে
নির্বেদ, আক্ষেপ, বা অকৃতের ছানি।


তখন না হয়
তোমার কম্পিত হাতের খরখরে আঙুলকে তুলি করে
শুয়ে শুয়ে শূন্য ক্যানভাসে একটা ছবি এঁকে
শেষবারের মতো দেখো আমাকে ...


সেই ছবিতে বিবসন আমি,
প্রগলভ সুতনু যৌবনসুধার নগ্নতায় মগ্ন ...
আর কর্কট ক্রান্তিতে হৃদয়ের শ্রাবণে অঝোর বৃষ্টি,
দহনের খেদ ধুয়ে আর্দ্র হাসি হাসছে
দ্বিধাহীন, কামনাবিলাসী, অপ্রতিম অপূর্ণ প্রেম ...
হাসি-কান্নারা অবারিত,
অনুভূতিরা নিখাদ, অবিনয়ী, অনিরুদ্ধ,
অপার মনের মাঠে ফাটলহীন জমিন ...
আর,
আমার বয়স তেইশ ...


আর তুমি ...
মুগ্ধ, বিহ্বল, আচ্ছন্ন, স্বপ্নিল, বিমোহিত
আমার আর একান্ত আমার,
প্রিয়তমেষু
চিত্রকর।