এই ঘরে চার দেয়াল জুড়ে নকশী প্রতিচ্ছবি,
আয়নাতে এক প্রেমিক হাসে ডুকরে কাঁদে কবি।
কবির খাতায় শূন্য কাগজ, নিঃস্ব যে তার মন,
আস্থা ভুলের মাসুল ভারে কাটছে প্রহর ক্ষণ।


প্রেমিক লেখে মান অভিমান প্রেম বিরহের কথা,
এক ছটাকের সুখ-মিশালে আধসেরী দেয় ব্যথা।
ব্যথায় কাতর প্রেম-যমুনায় সুখ-ফেনাদের ঢেউ,
মিঠে নোনা যা-ই লেখা হোক মঁজবে ঠিকই কেউ।


কবির মনে রোদ ঝাঁঝালো এক ফোঁটা নেই জল,
ঊষর বুকে পুষছে কবি এক প্রেমিকার ছল।
শব্দরা নেই ছন্দ নাকাল চেতন-কায়ায় ভার,
সাজলো না এই কবির গ্রীবায় প্রেমের মণিহার।


ছল কপটে প্রেমিক স্নাত ছলেই যে তার ঘর,
সেই ঘরে সুখ মৃন্ময়ী লোভ, মনে ক্বারিন ভর।
কৃষ্ণ খেয়াল কপিল আড়াল স্বপ্ন রঙীন চোখে,
আয়নাজুড়ে নকশা আঁকে খুব ধারালো নোখে।


নোখের আঁচড় কবির বুকেও, দগদগে সেই ক্ষত,
কেউ বলে প্রেম কেউ বা বলে হয়তো প্রেমের মতো।
ক্ষতের চিড়ে কাঁদে হাসে বিফল পরিতোষ,
নোখ ছিলো যার সে-ই বোঝেনি ক্ষতের কি-ই বা দোষ।


প্রেমিক হৃদয় বন্ধুর, তার ক্যানভাসে নেই দাগ,
নেই ক্ষোভ নেই রোষ-পরিহাস নেই ব্যথা নেই রাগ।
কথায় জোয়ার কথায় ভাটা কথাই নদীর তল,
শব্দে মোহ শব্দে মৌনী, শব্দেই কোলাহল।


কবি নিথর, আয়নাতে তার প্রেমিক রূপের হাসি,
মন বলে আয় প্রেমকে ভুলে দুঃখ স্রোতে ভাসি।
প্রেমিক দেখে চার দেয়ালে আয়না ভরা সুখ,
কথার মালায় প্রেমের জ্বালায় কাঁপছে কতো বুক !


এক বুকে ঘর এক বুকে পর এক বুকে ভাঁজ শুধু,
কে জানে কোন বুকে আসব, কোন বুকে কোন শীধু !
কবির বুকে এক প্রেমিকার এক বিষাদের চিড়,
পথভোলা এক পাখির মতো খুঁজছে যে তার নীড়।


আয়নাতে তাই তাকিয়ে কবি পায়না নিজের দেখা,
চার দেয়ালে কাব্য আটক আর হবে না লেখা।
লিখবে প্রেমিক কথার মালা হোক-ই বা ছাইপাশ,
প্রেম তো হবে, হোক-ই না হয় কাব্যে সর্বনাশ।  


প্রেমিক বাঁচে ইস্তিহারে কাব্য লেবেল সেঁটে,
সকাল দুপুর সন্ধ্যেটা তার কাব্যে যে যায় কেটে।
ধ্বস্ত প্রেমের নষ্ট শাপে রুদ্ধবাক আজ কবি,
এই ঘরে চার দেয়াল জুড়ে নকশী প্রতিচ্ছবি।