আমাকে কাছে ডেকে নাও নিয়তি,
আমার নতপ্রায় শরীরজুড়ে প্রচন্ড অসুখ,
তীব্র জ্বরের উত্তাপে উত্তপ্ত এই ক্ষণস্থায়ী অস্তিত্ব,
যেন উড়ন্ত কর্পূর!
পারদের উচ্চতা সিলিং ছুঁয়ে যায়।
আমাকে আগলে রেখো পরম মায়ায়,
তোমার পুরনো ঠিকানার খোঁজে চিরচেনা পথ হারিয়েছি বারবার,
শত-সহস্র-লক্ষ-কোটিবার।
চেয়ে দেখো,ডাকবাক্সে জমে থাকা চিঠির ক্ষয়ে গিয়েছে তারিখ,
খামে স্পষ্ট অভিমানের দাগ।
তোমায় কবিতা শুনানোর অপরাধে এখনো কণ্ঠনালীতে বিঁধে আছে ক্যাকটাস।
তোমাকে প্রার্থনায় শামিল করায় প্রশ্ন উঠেছে আমার ঈমান নিয়ে,
তোমার স্বপ্ন দেখার অপরাধে ভুগেছি আমরণ ইনসোমনিয়ায়।


শ্রাবণের ঘোর বরষার ক্রান্তিলগ্নে,
নগরীর প্রথম উজ্জ্বল রৌদ্রে দেখেছি তোমার মুখ;
অত:পর?
অত:পর তীব্র খরার কাল মাঠে-প্রান্তরে-অন্তরে।
আমাকে আরেকটি বার আহ্বান করো নিয়তি,
আমার পরম মায়ার নিয়তি,
সৃষ্টি হতে বারযাখ পর্যন্ত বিস্তৃত নিয়তি।
বহুকাল তোমার তালাশে নুয়ে গিয়েছে মেরুদণ্ড,
ফুসফুস স্থান সংকীর্ণতায় হয়েছে কবর।
শুধু তোমাকে আলিংগন করার আশায় আমার আয়ুবৃক্ষের সব পাতা ফুরিয়েছে শীতল রুক্ষতায়।


আমি রেনেসাঁর শেষ জয়ধ্বনি থেকে এনেছি সুর,
আমি জমা করে রেখেছি কাজলকালো চোখের সততার  নুর,
কলঙ্কিত ইতিহাসের পাতার আর্তনাদের স্তবক হতে এসেছি শুধু তোমার -ই খোঁজে।
আমি অতিক্রম করে এসেছি শেষ যুদ্ধদুর্গ,
আমি এসেছি পরাজিত প্রতিটি প্রাণের স্পন্দন হতে।
তুমি ত জানো,
ফাঁসির দড়ি ফুলে সজ্জিত করে দিলেই মালা হয়ে যায় না।
তবে কেন এই সম্মোহনী আবহ?


আমার মৃত্যুর দিনক্ষণ নির্ধারিত হয়েছে নিয়তি,
আমার পরম মায়ার নিয়তি,
যুদ্ধের পথগামী শেষ সন্তানকে জননী যেভাবে আগলে রাখার ব্যর্থচেষ্টা করে,
মনে পড়ে তোমার?
ঠিক তদ্রুপ আমাকে আবদ্ধ করে নাও নিয়তি।
শেষবারের মতো আমাকে বাঁচতে দাও শরতের নীল আকাশের নিচে।