অনাগত সময়ের কথা ভেবে,
আবির্ভাবের প্রথমদিনেই কেঁদেছিলাম !
আহ্নিক নিয়মে এসেছে অন্তিম সময়, যেতে হবে !
এখনো বিগত অশ্রু, বর্তমানের চোখে !
আজও দেখি, মাতৃজঠরের মত দুর্ভেদ্য পুরনো আঁধার !
আদিম অমাবস্যায় অবগুন্ঠিত সমুদয় বোধ !
জীবনের প্রতিটি রাত অপেক্ষায় থেকেছি !
অপেক্ষায় থেকেছি, কোন এক ইপ্সিত ভোরের !
এখনো আমার বিনিদ্র চোখ, বিনিদ্র ভবিষ্যৎ
বিনিদ্র পায়ে হাঁটে, বিনিদ্র ভাবাবেগে !
আসার সময় ভাবিনি। যাবার সময় ভাবছি, ভাবতে হয় !
যখন ব্যাপক অন্ধকারে নিমজ্জিত অপরাহ্ন,
চারিদিকে কালো পুকুর, কালো নদী,
কালো সমুদ্রের কবর-কালো জলে ভেসে চলেছে
অজস্র কালো জাহাজ, কালো নাবিক !
আর এই আমি, অনন্তকালের জন্মান্ধ মানব সন্তান,
অন্ধ সৈকতে নিঃসঙ্গ পায়ে হাঁটি !
রাত পোহালেই কালো ভোর,
মাথার উপর তক্ষকের চোখের মতো কালো নক্ষত্র !
কালো আকাশ, কালো মেঘ,
কালো শরীরে আদিম কালো বৃষ্টির ফোঁটা !
কালো ঈশ্বর, কালো দেবতা !
অযুত কালো পায়ের ধুলোয় ঝাপসা বিবেক !
নষ্ট করোটিতে বিবদমান নষ্ট এলেম !
নষ্ট চাঁদের নষ্ট আলোয় অবগাহন করে
নষ্ট শরীর, নষ্ট বোধ !
সত্য ভূমন্ডলের সত্য মাটির ঢেলায়
ভুল পায়ে আজন্ম হেঁটেছি, ভুল পদরেখায় !
আসার সময় জন্মপাপের অনুশোচনায় কেঁদেছিলাম !
যাবার সময় মহাজাগতিক বিবর্তনের খেলায়
মুগ্ধতা রেখে চলে যাব !
অবদমিত প্রত্যয় নিঃসঙ্গ বুকের নিস্পৃহ চিলেকোঠায়,
আঁধার পেরোতে; নিঃসীম আঁধারের সেতু হবো না আর!
অমানিশার বেবাক অবগুণ্ঠন ছিঁড়ে,
কালো দৈত্যের উদ্যত ডানা ভেঙ্গে,
অনন্ত নক্ষত্রের বীজ বুনে যাবো এই মৃত্তিকায় !