ছোট্ট খোকন সোনাটি উদাস ভঙ্গিমায় চাহিয়া রহিয়াছে
কখন তাহার বাবা লাল জামা লইয়া আসিবে,
ঈদে লাল পাঞ্জাবী পড়িয়া ঈদগাহে যাইবে,
গত ঈদে বাবা আসিবে আসিবে বলিয়া রাত্রি পার করিলেন।
ঈদের নামাজ আর পড়া হইলো না খোকার,ছয় বছরের বালক
এই ঈদে মাটির ব্যাংকে জমানো টাকা বাবার হাতে তুলিয়া দিয়া কহিলো,
বাবা লাল পাঞ্জাবী আনিবে কিন্তু-
আমি তোমারি হাত ধরিয়া ঈদগাহে যাইবো ।
হারুন,জাবেদ'কে দেখিয়া লও তাহারা কেমন সুন্দর লাল পাঞ্জাবী  
পড়িয়া ঘুরিয়া বেড়াইতেছে।
আমার বহুদিনের শখ আমি ও তাহাদের মত করিয়া লাল পাঞ্জাবী পড়িবো।
সকাল আট'টা বাজিতে আর বেশি দেরি নাই,
সবায় লাইন বাঁধিয়া ঈদগাহে চলিয়া যাইতেছে,
তাহা দেখিয়া খোকা নীরবে চাহিয়া রইলো অসহায় বদনে অশ্রু ঝরায়তে
লাগিলো আর অপেক্ষা কখন তাহার, বাবা আসিবে লাল জামা হাতে লইয়া,
কাল রাত্রিরে অনেকবার বার বলিয়াছে,বাবা কিছুতেই তাহা কর্ণপাত করেননি ।
মদের নেশায় ডুবিয়া রইয়াছিলেন,
মা হারা খোকা আদর বঞ্চিত হইয়া কাটিতেছে,
মসজিদে ঈদের নামাজ শুরু হইয়া গিয়াছে ,
কিন্ত বাবা লাল পাঞ্জাবী লইয়া আসিতেছেন না দেখিয়া রাগ বাড়িতে লাগিলো-
ঘোমট বদনে বারেন্দায় বসিয়া রহিয়াছে ।
হঠাৎ তাহার নজরে পড়িলো কত গুলো লোক কাহাকে জড়াইয়া ধরিয়া আনিতেছে
যখন তাহার উঠানে আসিলো রক্তাক্ত বাবার মুখ লাল পাঞ্জেবী হাতে দেখিয়া খোকা থ' হইয়া গেলো ,চিৎকার করিয়া কাঁদিয়া উঠিলো  
আব্বু আব্বু কথা বলো,আমার লাল পাঞ্জাবী চাই না ।
তুমি ছাড়া আমার কে আছে বলো ? কথা বলো---বলিয়া
খোকার কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী হইয়া যাইতে লাগিলো ।
খুশির বদৌলতে আনন্দাশ্রু স্রোত বইতে লাগিলো ।


রচনাকাল
২৮।০৭।২০১৪
ইউ এ ই।